১২ রিকশাচালকের দায়িত্ব নিলেন আইনজীবী-চিকিৎসক দম্পতি
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো দেশের জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশনার মধ্যে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাফেরা কমে যাওয়া এবং প্রায় সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। তবে দৈনিক রোজগার না করলে যাদের পেটে ভাত জোটে না, তাদের আপদকালীন এ কষ্ট লাগবে এগিয়ে আসছেন সামর্থ্যবানরা।
তাদেরই দুজন লিটন-খাদিজা দম্পতি। রাজধানীর কমলাপুরের একটি গ্যারেজের এমনি ১২ জন রিকশাচালককে আপদকালীন সময়ে প্রতিদিন তিন বেলা খাবারের বন্দোবস্ত করছেন সু্প্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন ও তার স্ত্রী ডা. খাদিজা।
ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, ‘ডা. খাদিজা এবং আমি করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ঢাকার কমলাপুরে অবস্থিত একটি গ্যারাজের বারজন রিকশাচালককে দৈনিক তিন বেলা খাদ্যসামগ্রী সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর ফলে আমাদের রিকশাচালক ভাইয়েরা এই খারাপ সময়ে তাদের উপার্জিত সামান্য অর্থ গ্রামে পাঠাতে পারবেন প্রিয়জনদের জন্য। আসুন, আমরা সবাই এই খারাপ সময়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়াই। আসুন সবাই একসাথে বাঁচি।’
তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
তিনি বলেন, আমার প্রিয় বন্ধু ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ঢাকার কমলাপুরে অবস্থিত একটি গ্যারাজের বার রিকশাচালককে দৈনিক তিন বেলা খাদ্যসামগ্রী সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই মানবিক উদ্যোগে সঙ্গী হয়েছেন তার স্ত্রী ডা. খাদিজা। লিটনের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানতে পারলাম, এ কাজ করার জন্য লিটনের পরিবারের ওপর কোনো বাড়তি চাপ পড়বে না। তারা শুধুমাত্র তাদের প্রতিদিনের খরচ কমিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, আসুন আমরা সবাই লিটনের মতো এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াই। সবাই একসাথে বাঁচি।
ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শতাব্দীর এই দুর্যোগে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। এজন্য আমি ও আমার স্ত্রী ডা. খাদিজ সিদ্দিকা রিকশাচালকদের জন্য সামান্য ব্যবস্থা করেছি। তবে এটার পরিধি আরও বাড়াব।’
তিনি আরও বলেন, আমি দুই শতাধিক পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্টের (পিপিই) বন্দোবস্ত করছি। হাতে পেলে একটি হাসপাতালকে দেব। আমি সমাজের বিত্তবানদের আহ্বান জানাব, সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই কাজে এগিয়ে আসতে।
এফএইচ/এসআর/পিআর