ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কথা ছিল ৪৮ ঘণ্টা, তবে ১৪৪ ঘণ্টায়ও পৌঁছেনি করোনার কিট

আবু আজাদ | প্রকাশিত: ১২:০৬ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২০

ছয়দিন আগে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রামের ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে করোনাভাইরাস শনাক্তকারী কিট পৌঁছানোর ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে ১৪৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। বিআইটিআইডি থেকে প্রশিক্ষণের জন্য যে তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল, প্রশিক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদেরও। তবে চট্টগ্রামের জন্য করোনাভাইরাস শনাক্তকারী কিট পৌঁছায়নি।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি মিয়া জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘করোনার কিট পাঠানো হয়নি। বিআইটিআইডি থেকে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের একজন ডাক্তার এবং দুইজন টেকনিশিয়ানকে প্রশিক্ষণের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। তাদের শুধু প্রশিক্ষণ দিয়েই পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’

সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) থেকে সবকিছু সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চলে যাচ্ছে। এখন যা করার তারাই করবেন, আমরা তাদের সাহায্য করব।’

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলা-সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটির সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় গঠিত বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর জানান, চট্টগ্রাম থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নির্ণয় করা হবে।

এ লক্ষে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক করোনাভাইরাস শনাক্তকারী কিট ও স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক-নার্স কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুসারে পার্সোনাল প্রটেকশন (পিপিই) পাঠানো হবে।

একই সভায় ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালটিকে পুরোপুরিভাবে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করার ঘোষণা দয়া হলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, সেখানে এখনো মাত্র ১০০ বেড করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

এদিকে পিপিই ছাড়া সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসক, নার্স ও রোগীর সেবায় জড়িতদের। গত বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) রাতে চট্টগ্রাম নগরের বেসরকারি ‘রয়েল হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডে’ চিকিৎসাধীন অবস্থায় শ্বাসকষ্টে এক নারীর মৃত্যু হয়। ওই নারীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে এমন সন্দেহে তাকে সেবা দেয়া এক চিকিৎসককে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে হাসপাতালটির আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট।

বিভিন্ন হাসপাতালে সর্দি-কাশি নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সম্ভাব্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া নিয়ে বেহাল অবস্থায় আছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম

বিআইটিআইডি সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহত্তর চট্টগ্রামের রোগীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য স্থাপিত একমাত্র হাসপাতাল সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)। দেশে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর রোগীর শুশ্রুষার জন্য বিশেষায়িত এই হাসপাতালে ৫০ শয্যার আইসোলেশন বিশিষ্ট ওয়ার্ড স্থাপন করা হয়।

করোনা চিকিৎসার দায়িত্ব দেয়া হয় হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশিদের নেতৃত্বে একটি টিমকে। এই টিমের তিন সদস্য ইতোমধ্যে ঢাকায় আইইডিসিআর এ করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার বিষয়ে ট্রেনিংও সম্পন্ন করে এসেছেন। কিন্তু তাদের এই ট্রেনিং কোনো কাজেই লাগছে না। এক মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো এখানে করোনা পরীক্ষার কোন কিট আসেনি। ফলে করোনা পরীক্ষার ট্রেনিং নিয়েও সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য কিছুই করতে পারছেন না তারা।

প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. মামুনুর রশিদ জানান, বিআইটিআইডিতে সন্দেহভাজন করোনা রোগীর পরীক্ষা করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জ্বর-সর্দি আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ছুটে আসছেন। কিন্তু তাদের কাছে করোনা পরীক্ষার কোন কিট না আসায় সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় সেই নমুনা পাঠানো হচ্ছে। এই রিপোর্টের জন্য আমাদের কয়েকদিন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।

এমএফ/জেআইএম