ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আশকোনা হজ ক্যাম্পে সেনা মোতায়েন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৫৭ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২০

ইতালিফেরত ১৪২ বাংলাদেশিকে রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে (বিশেষ ব্যবস্থায় পর্যবেক্ষণ) রাখা হয়েছে। কিন্তু বিদেশফেরত বাংলাদেশিরা কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অস্বীকৃতি জানালে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আশকোনা হজ ক্যাম্পে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর- আইএসপিআর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

আইএসপিআরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আশকোনা হজ ক্যাম্পে ইতালিফেরত যাত্রীদের একসেস কন্ট্রোল ও নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

korona2.jpg

এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঘোষণা দেন, প্রয়োজনে সরকারি তত্ত্বাবধানে ইতালিফেরত বাংলাদেশিদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। তার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সকালে ইতালি থেকে আসা ১৪২ বাংলাদেশিকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে পাঠানো হয়। কিন্তু তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অস্বীকৃতি জানান।

পরিবার-পরিজন সর্বোপরি দেশের মানুষের স্বার্থে বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার অনুরোধ জানানো হলেও তারা সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে নেয়া হলে সেখানে একপর্যায়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে। হজ ক্যাম্পের অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনের বাইরের গেটে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন প্রবাসীরা। হজ ক্যাম্পের প্রধান গেটে বিক্ষোভ এবং গেট ধরে তারা ধাক্কাধাক্কি করেন। হজ ক্যাম্পে থাকার পরিবেশ নেই উল্লেখ করে প্রশাসনের অবহেলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগানও দেন।

korona2.jpg

ক্যাম্পের বাইরেও বিদেশফেরত আত্মীয়স্বজনের মধ্যে মারমুখিভাব লক্ষ্য করা যায়। সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কেউ কেউ আবার ছোট শিশুদের নিয়ে খাবার হাতে সেখানে উপস্থিত হন। আবার অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেন এই বলে যে, প্রিয়জন দেশে ফিরেছে— এটাই তাদের বড় পাওয়া

প্রবাসীরা বলেন, আমরা ইতালিতে একবার টেস্ট করে এসেছি। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমাদের মধ্যে কোনো উপসর্গ ছিল না বলে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপরও কেন আমাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলো বুঝতে পারছি না। এছাড়া ক্যাম্পের ভেতরের পরিস্থিতি থাকার মতো নয়। তবে বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাদের শান্ত করে ক্যাম্পের ভেতরে ফিরিয়ে নেয় পুলিশ।

দুবাই হয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে আসা ১৪২ জনের শরীরে প্রাথমিকভাবে করোনার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানায় আইইডিসিআর।

korona2.jpg

আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন পাশাপাশিই হবে। যদি তথ্য সংগ্রহের পর দেখি যে তারা বাড়ি গিয়ে সেলফ কোয়ারেন্টাইন করতে পারবে, তাহলে তারা বাড়িতে যাবে। এদের মধ্যে কারো সেলফ কোয়ারেন্টাইনে যদি সমস্যা হয় তাহলে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করা হবে।

এর আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক জানান, ইতালিফেরত প্রত্যেককেই সরকারি তত্ত্বাবধানে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক।

মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে তাদের আমরা হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেব। এটিই আমাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের তো রাখতেও কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যারা বাইরে থেকে আসছে তারা তো মারমুখি, তারা তো থাকবে না। যে ব্যবস্থা দুই মাস ধরে আমরা নিয়েছি সেটা তো আর কোনো দেশ নেয়নি।

চীনের উহান থেকে যে নতুন করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে তা প্রাণঘাতী রূপ এখন সবচেয়ে ভয়াবহ ইউরোপের দেশ ইতালিতে। সেখানকার সরকার গোটা দেশ অবরুদ্ধ করে রাখলেও গতকাল শুক্রবার ইতালিতে ভাইরাসটির সংক্রমণে রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৫০ জনের মুত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড আড়াইশ জনের প্রাণহানি ঘটায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা এখন এখন এক হাজার ২৬৬ জন। এছাড়া করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৬০।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। শনিবার পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৪৩৬ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৮। অন্যদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭২ হাজার ৫৩২ জন।

এআর/এমএআর/জেআইএম