পুকুর খনন দেখতে উগান্ডা, নিউজতো এমনি হয় না : পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘অদ্ভুত ধরনের জিনিস হয়। দেশ-বিদেশ বেড়ানোর নামে আমরা যা করি, এটা মানুষের নজরে থাকে। এমনি কিন্তু নিউজ হয় না, বালিশকাণ্ড বলে নাম হয়ে গেল। কিছু না কিছু ছিল এটার মধ্যে। এই যে পুকুর খনন শেখার জন্য উগান্ডা যাবে না কোথায় যাবে, এগুলো এমনিতে হয়নি।’
সোমবার (৯ মার্চ) রাজধানী ধানমন্ডির ২৭ নম্বরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (পিআিইএমএস) অব আইএমইডি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ সব কথা বলেন মন্ত্রী।
মান্নান বলেন, ‘মানুষ যে দল বেঁধে বিদেশ যায়, ৭, ৮, ১০ জন করে, আমার মনেও প্রশ্ন আসে মাঝে মাঝে। যেমন লেখা থাকে স্টাডি ট্যুর। তিন দিনের স্টাডি ট্যুর, যেতে দেড় দিন, আসতে দেড় দিন। ঘুমই তো ভাঙে না গিয়ে। নিস্তেজ হয়ে যায়। কীভাবে কী দেখে, কী শেখে- আমার প্রশ্ন আছে। কিন্তু এগুলো করা হয়। নিজেদের ধোকা দেয়া, বোকা বানানোর দিন শেষ।’
তিনি বলেন, ‘দেশে একটা প্রবণতা বেড়ে গেছে। খালি বিল্ডিং বিল্ডিং আর বিল্ডিং। প্রকল্প সাত তলা, প্রকল্প ১০ তলা, প্রকল্প ২০ তলা। ভেতরে কনটেক্সট কী, সেটা বিবেচনা করার দরকার আছে। প্রকল্প শুধু বিল্ডিংয়ে নয়, প্রকল্প মেধায়, কাজে এবং আউটপুটে, সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’
সব প্রকল্প তদারকির সুযোগ-সুবিধা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প পরিচালক তার প্রকল্প এলাকায় না থাকলে ভালো কিছু আশা করতে পারি না। এটা মনস্তাত্ত্বিক এবং কালচারাল। আমাদের দুর্ভাগ্য, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকরা ঘুরে বেড়ান। অবশ্য তাদেরও অনেক দায়-দায়িত্ব আছে, ঢাকায় যেতে হয় বরাদ্দ আনার জন্য, এটার জন্য সেটার জন্য।’
প্রকল্পের কেনা-কাটা করার বিষয়েও সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
১৪তম ব্যাচের এ প্রশিক্ষণে ৩০ জনের অধিক প্রকল্প পরিচালকের মধ্যে অল্প কয়েকজন পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা তাদের অধস্তন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখতাম, যখন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়, ১৫ জনকে ডাকি, আসে ৮ জন। ৮ জন যুগ্ম-সচিব এবং তদূর্ধ্ব লেখা থাকে। আসে অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি। এসে চা-সিঙাড়া খেয়ে বাড়ি চলে যায়। মানুষ এগুলো দেখছে।’
তিনি বলেন, ‘পিএমআইএস এমন হওয়া উচিত যে, সবার জন্য খোলা থাকবে, কানাডায় বসে দেখা যাবে আমার গ্রামে কোন প্রকল্পের কাজ কত দূর হচ্ছে। এগুলো লুকানোর কিছু নাই। প্রধানমন্ত্রীও চান, সবাই সব তথ্য জানুক।’
পিডি/এফআর/এমকেএইচ