স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারছেন চীন ফেরতরা
রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনা হজ ক্যাম্পের ডরমিটরিতে কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে অবস্থান করা চীন ফেরত যাত্রীরা মোবাইল ফোন, ইমেইল ও ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যগত অসুবিধার কথা স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের জানাতে পারছেন। তবে শুরুর দিকে এসব যাত্রীদের মধ্যে থেকে গ্রুপ লিডার বাছাই করে তার মাধ্যমে অন্যদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হতো। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় সঠিক তথ্য পাওয়ার বিষয়ে সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে যাত্রীদের প্রত্যেকেই যেন তাদের নিজেদের সমস্যার বিষয়ে প্রতিদিন জানাতে পারেন সেজন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর তাদের যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোন, ইমেইল ও মেসেঞ্জার সেবা চালু করে।
এর ফলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রত্যেকেই নিজ নিজ সমস্যা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খুব সহজে অবহিত করতে পারছেন। অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের সুযোগ পেয়ে চীন ফেরত যাত্রীরা খুব খুশি।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১ ফেব্রুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে চীনের উহান প্রদেশ থেকে ৩১২ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদেরকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে ১৪ দিনের জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। মোট ৩১২ জনের মধ্যে বর্তমানে ৩০৩ জন হজ ক্যাম্পে রয়েছেন। বাকি ৯জনের মধ্যে ৮ জন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ও একজন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এখনো পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকাল ৮টা পর্যন্ত সরাসরি চীন ও বিভিন্ন দেশ হয়ে চীনা নাগরিকসহ সর্বমোট ৭ হাজার ৮২৯ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকালে চীন থেকে ১৩৬ জন দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরত যাত্রীদের মধ্যে ৫৭ জনের জ্বর ও কাশি থাকায় তাদের লালার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে তাদের কারও দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত অর্থাৎ ছোঁয়াচে হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে দেশটির হুবেই প্রদেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪৯ জনে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হুবেই প্রদেশে ১৪ হাজার ৩১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৫৬ জনের অবস্থা গুরুতর।
এমইউ/এফআর/পিআর