ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

যেভাবে কোটিপতি বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক

প্রকাশিত: ১০:০৪ এএম, ০৬ অক্টোবর ২০১৫

প্রাথমিকের গণ্ডি পার করতে পারেননি আবু ধাবিতে একটি খামারে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিক মিজানুর আব্দুল ওয়াহাব। দেশে সাত ভাইবোনের পরিবারে সব সময় টানাপোড়েন লেগে থাকতো। পরিবারের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের আশায় আবু ধাবিতে পাড়ি জমান সেই ১৯৯৬ সালে। সেখানে একটি উট পালনের খামারে মাসে ৬ শ’ দিরহামের বিনিময়ে কাজ নেন।

বাড়িতে বাবা-মা যে ঘরে থাকেন সেটি এখনো টিনের তৈরি। কিন্তু দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আবুধাবিতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসী মিজান এখন স্বপ্ন দেখছেন, বাবা-মা যে ঘরে থাকেন সেটি পাকা করবেন। তার ছোট আরো যে ছয় বোন আছে তাদের পড়াশুনা ও ভাল ছেলে দেখে বিয়ের ব্যবস্থা করবেন। নিজে একটি গাড়ি কিনবেন। দেশে এসে ব্যবসা শুরু করবেন, যেখানে দেশের বেকার তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।

পাঠক নিশ্চয়ই অবাক হয়েছেন প্রবাসী একজন শ্রমিক কীভাবে এত স্বপ্ন দেখেন? স্বপ্ন নয়, মিজানের এসব পরিকল্পনা এখন শুধু বাস্তবায়নের অপেক্ষায়! অার তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নেপথ্যে আছে একটি লটারি জেতার কাহিনী।

আবুধাবির আল আনসারি এক্সচেঞ্জ হাউজ প্রত্যেক বছর লটারির আয়োজন করে। লটারিতে প্রথম বিজয়ীকে দেওয়া হয় এক মিলিয়ন দিরহাম যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দুই কোটি টাকা। এ বছর লটারিতে প্রথম বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশি শ্রমিক মিজানুর আব্দুল ওয়াহাব। রাতারাতি কোটপতি হয়ে গেছেন বাংলাদেশি এ প্রবাসী শ্রমিক।

২০ বছর ধরে একই ফার্মে কাজ করা মিজান জানান, আমার স্বপ্ন ছিলো একটি বাড়ি তৈরি করা, আমার বাবার পুরনো বাড়ি মেরামত করা। এই লটারি জেতায় আমার এ স্বপ্ন এখন পূরণ করতে পারবো। পরিবারের অন্য সদস্যদের সহায়তা করতে এখন তিনি দেশে ফেরার পরিকল্পনা করেছেন বলে জানান।

লটারি জেতার পর প্রাইমারি শেষ করতে না পারা মিজান বলেন, এই টাকা ব্যয় করে আমার সন্তানদেরকে শিক্ষিত করতে চাই, একইসঙ্গে দেশে একটি প্রাইভেট ব্যবসা শুরু করবো। যেখানে দেশের অনেক তরুণ কাজ করতে পারবেন। ফলে তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

১৯৯৬ সালে দুবাইয়ে কাজের সন্ধানে পাড়ি জমান মিজান। এদিকে মিজানের বাবা রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আট বছর ধরে কাজ করছেন।

লটারির চেক হাতে পাওয়ার সময় মিজান বলেন, আমি যেটাকে আগে জীবন বলে জানতাম এখন সেটার পরিবর্তন হবে। তিনি বলেন, প্রত্যেকদিন সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠি, সকালের নাস্তা সেড়ে ফার্মের কাজে নেমে পড়ি। সারাদিন কাজের পর যখন বাসায় ফিরি তখন ঘড়ির কাটা থাকে সন্ধ্যা সাতটায়। এরপর রাতের খাবার নিজে তৈরি করে একটু বিশ্রাম ও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেই।

আল আনসারি এক্সচেঞ্জ হাউজের ব্যবস্থাপক রাশেদ আল আনসারি বলেন, লটারিতে মিলিওনেয়ার নির্বাচিত হওয়ার জন্য মিজানকে অনেক ধন্যবাদ। দ্য ন্যাশনাল

এসআইএস/পিআর