হাতিরঝিলে কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকবে না : পূর্তমন্ত্রী
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন ভাঙার কাজ আমরা আজ থেকে শুরু করলাম। আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শেষ হবে। হাতিরঝিল প্রকল্পের মধ্যে শুধু বিজিএমইএ ভবন না, যত অবৈধ স্থাপনা আছে সবগুলো অপসারণ করা হবে। আমরা চাই হাতিরঝিলে পানির গতি বৃদ্ধি পাক, সুন্দর ঢাকা গড়ে উঠুক।
বুধবার বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর তিনি একথা বলেন।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে প্রথমে ডিনামাইটেরর ব্যবহারের চিন্তা করা হয়েছিল। তবে পরিবেশের কথা আর এ ভবনটির পাশে থাকা পাঁচ তারকা হোটেলের বিষয়টি মাথায় নিয়ে ডিনামাইট ব্যবহারের চিন্তা থেকে সরে এসেছি আমরা। এখন যান্ত্রিকভাবে ভবনটি ভাঙার কাজ পরিচালিত হবে। এছাড়া আমাদের দুটি টিম তাদের কাজ দেখভাল করবে। ছয় মাসের মধ্যেই তাদের কাজ শেষ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই ভবন ভাঙার পর হাতিরঝিল প্রকল্পেরর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। এ প্রকল্পের গভীরতা বৃদ্ধি পাবে। এর আগে হাতিরঝিল প্রকল্পের পানিতে দুর্গন্ধ থাকতো এখন সেটা নেই। আমরা চাই একটি সুন্দর ঢাকা গড়তে এজন্য সব অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হবে।
ভবন ভাঙার কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুর্ঘটনা মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে দুটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবেন। ভবনটি ভাঙার কাজে নিয়োজিত আছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ। ভবনটি ভাঙতে তাদের সময় লাগবে ছয় মাস।
বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার হবে তার মধ্যে রয়েছে- এক্সক্যাভেটর, বুলডোজার, কংক্রিট জ্যাকহামার, দীর্ঘ ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্রেন, ড্রাম ট্র্যাক, ফর্ক লিফট, ওয়েল্ডিং মেশিন, বিভিন্ন প্রকার কাটিং মেশিন, বিভিন্ন প্রকার হ্যান্ড টুলস এবং গ্যাস কাটার।
বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুর্ঘটনা মোকাবিলায় দুটি টিমের মধ্যে একটি টিম হলো টপ সুপারভিশন কমিটি। এ টিমে রয়েছে- রাজউক, বুয়েট, ফায়ার ব্রিগেড, প্রকল্প কর্মকর্তা (সেনাবাহিনী, ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড), অথরাইজড অফিসার (রাজউক), হাতিরঝিল প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক।
এছাড়া সার্বক্ষণিক তদারকি কমিটিতে রয়েছে- হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক, হাতিরঝিল প্রকল্প কর্মকর্তা (সেনাবাহিনী, ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড) এবং হাতিরঝিল প্রকল্প ব্যবস্থাপক।
এর আগে বিজিএমইএ ভবন ভাঙা নিয়ে বেশ কয়েকবার জটিলতা দেখা দেয়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবনটি ভাঙার দরপত্র আহ্বানের পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ভবনটি ভাঙতে কাজ পায় ‘সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের দরপত্র ছিল এক কোটি ৭০ লাখ টাকার। সে অনুযায়ী তাদের কার্যাদেশও দেয়া হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ায় সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স। শেষ মুহূর্তে সরে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে টাকা কেটে নিয়েছে রাজউক।
তারা এ ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফোর স্টার’ গ্রুপকে কাজ দেয় রাজউক। তাদের দরপত্রে টাকার পরিমাণ ছিল এক কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তবে এখন তারা এক কোটি দুই লাখ ৭০ হাজার টাকায় ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করছে।
এএস/জেএইচ/এমএস