ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

সব জায়গায় আমরা শান্তি চাই, ইরান প্রসঙ্গে ড. মোমেন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:২৯ পিএম, ০৭ জানুয়ারি ২০২০

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা সব জায়গায় স্থিতিশীলতা চাই, শান্তি চাই। কারণ আমরা সব জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছি। আরেক দেশে ঝামেলা হোক আমরা সেটা চাই না।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মুজিববর্ষ উদযাপন সমন্বয় কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর একপাক্ষিক হামলায় সম্প্রতি ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কুদস্ বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহত হন। ওই ঘটনার জেরে তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে। দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। সেজন্য অনেকে মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করছেন।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, অন্যরা ঝগড়া-ঝাটি করুক। কিন্তু আমরা ব্যালেন্সড ইন্ডিপেন্ডেন্ট ননঅ্যালাইনড (ভারসাম্যপূর্ণ জোটনিরপেক্ষ শক্তি) থাকতে চাই। আমাদের নীতি- সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। ওরা ওখানে ঝগড়া-ঝাটি করুক, এটা তাদের ঝগড়া-ঝাটি, আমাদের নয়

উত্তাল ইরাকে বাংলাদেশি কর্মীদের সবশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা ভেবে আমরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। আমরা নিরবচ্ছিন্ন খবর রাখছি। আমাদের প্রায় লাখ তিনেক শ্রমিক ইরাকে আছেন। তারা সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।

তবে আশার বাণী শুনিয়ে মন্ত্রী বলেন, এগুলো তো খুব টার্গেটেড অ্যাটাক (সুনির্দিষ্ট আক্রমণ) হচ্ছে, সুতরাং তারা (বাংলাদেশি কর্মী) এখনো কোনো ঝামেলায় পড়েনি। তাছাড়া গতকালও রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। আমি বলেছি আপনি খোঁজ রাখেন এবং ওদেরকেও সতর্ক থাকতে বলেন।

‘আমরা গ্লোবালাইজড ওয়ার্ল্ডে আছি। এখানকার কোথাও যদি অস্থিতিশীলতা হয়, আমাদের দুশ্চিন্তা হয়। কারণ আমাদের এক কোটি ২২ লাখ লোক বিভিন্ন দেশে আছে। তাদের ইকোনমি খারাপ হলে আমাদেরও দুঃখ লাগে। কারণ সেখানে স্থিতিশীলতা থাকলে আমাদের উন্নয়নের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন সহজ হয়।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বজুড়ে শান্তি কামনা করে বলেন, আমরা সব জায়গায় স্থিতিশীলতা চাই, শান্তি চাই। কারণ আমরা সব জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছি। আরেক দেশে ঝামেলা হোক আমরা চাই না।

ভারতের নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক বেশ উচ্চপর্যায়ে রয়েছে। আজকেও প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তা আমাদের জ্ঞাত, ধর্তব্যের মধ্যে আছে।

‘প্রাথমিকভাবে এটা অভ্যন্তরীণ একটা বিষয়। এটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েও যাচ্ছে। ইনিশিয়ালি বেশ অস্থিরতার মধ্যে ছিল, আস্তে আস্তে সেটা কমে আসছে। আশা করি, এটা শান্তিপূর্ণভাবে তারাও ম্যানেজ করবে। এটার কারণে দুই দেশের অন্যান্য যে বিষয়গুলো আছে, সেসব যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটাও আমরা সবাই খেয়াল রাখব।’

এ বছরের উল্লেখযোগ্য আয়োজনের মধ্যে মুজিববর্ষ উদযাপন কর্মসূচি সবচেয়ে বড় উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, সারাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের মিশনগুলোতে সারাবছর বিভিন্ন কার্যক্রম চলবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজে গতিশীলতা আনতে সরকারের চিন্তা-ভাবনার বিষয়টি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম কীভাবে আরও গতিশীল করা যায়, বিদেশে যে মিশনগুলো আছে তাদের ওপর অর্পিত বিষয়গুলো আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে যেন ফল নিয়ে আসতে পারি, সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।

‘আগামীতে আমরা চাচ্ছি, এক টিমওয়ার্কের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়েও একটা ভালো টিম গড়ে উঠবে। একইভাবে আমাদের ৭০-৭৫টি মিশন আছে, তাদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ ও সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের কাজকে আরও গতিশীল করতে চাইছি।’

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগে আমরা কেবল দ্বিপাক্ষিক পথে হেঁটেছি। তারপর আমরা বহুপাক্ষিক পথে হাঁটা শুরু করেছি। সাম্প্রতিক সময়ে জবাবদিহি ও বিচারের পথও খুলছি। আমি মনে করি যে, যদিও বলা হচ্ছে এটা মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ, কিন্তু প্রত্যেকটা প্রত্যেকটার কমপ্লিমেন্টারি। তারা যেন সসম্মানে ও স্বেচ্ছায় নিজ বাসভূমে ফিরতে পারে, এটা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেটা মাথায় রেখে সবগুলো পথ তৈরির উদ্যোগ নেব আমরা।

‘এটা আমাদের জন্য কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারও (আত্মবিশ্বাস তৈরির পদক্ষেপ) বটে। কনফিডেন্স বিল্ডিংয়ের কনটেক্সটে নানান ধরনের প্রক্রিয়া আছে। মিয়ানমার নানা ধরনের প্রক্রিয়া নিয়েছে, জাতিসংঘ নিয়েছে। প্রত্যেকটাই কিন্তু অ্যাকাউন্টেবিলিটি ফ্রন্টে ভূমিকা রাখবে’- বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জেপি/এইচএ/এমকেএইচ