ভোটার হওয়ার যোগ্য ৯০ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে
প্রায় ৯০ লাখ ভোটারযোগ্য বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রবাসীদের ভোটার করার প্রক্রিয়া উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। প্রথমে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসী ভোটাররা এই সুযোগ পাচ্ছেন। অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার হতে পারবেন তারা।
সিইসি বলেন, প্রায় ৯০ লাখ ভোটারযোগ্য বাংলাদেশি নাগরিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী জীবন-যাপন করছেন। তাদের অধিকাংশের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। ফলে তারা ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত হতে পারেননি। ব্যাংক হিসাব খোলা, বিবাহ, সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, পাসপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা আবশ্যক করা হয়েছে। সে কারণে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে সুপারিশ করে।
সেই আলোকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পরিচয়পত্র দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট ভোটার তালিকায় প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে একটি নীতিমালা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য কোনো দালালের কাছে যাওয়ার দরকার নেই। আপনারা নিজেরাই কারও সহযোগিতা নিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে এটি পূরণ করতে পারবেন।
এর আগে অবশ্য ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, বাংলাদেশি প্রবাসী নাগরিকদের বিদেশে অবস্থানকালীন এবং দেশে প্রত্যাবর্তনের পর বিভিন্ন সেবাপ্রাপ্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র একটি অপরিহার্য। বর্তমানে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারযোগ্য নাগরিকরা দেশে ফিরে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারলেও প্রবাসে ভোটার পরিচয় নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু না থাকায় তাদের নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাদের পরিচয়পত্র দেয়া গেলে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে তারা আরও ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা যায়।
ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের পর সেসব আবেদন সঠিক কি না, ইসি তা কেন্দ্রীয়ভাবে যাচাই করবে। যাচাই-বাছাই শেষে ইসির কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়ে যোগ্য ও সঠিক আবেদনকারীদের ছবি তোলাসহ ফিঙ্গার প্রিন্ট ও চোখের মনির ছাপ (আইরিশ) গ্রহণ করবেন।
প্রবাসীদের ফরম পূরণের ক্ষেত্রে আটটি তথ্য দিতে হবে। সেগুলো হলো—পিতা-মাতার নাম ইংরেজি ও বাংলায়, বসবাসরত দেশের নাম, জিপকোড, বাসা ও হোল্ডিং নম্বর, স্ট্যাট বা প্রদেশ, ফোন নম্বর, শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম প্রভৃতি। এ ছাড়া পাসপোর্ট নম্বরও উল্লেখ করতে হবে।
মালয়েশিয়া ছাড়াও যুক্তরাজ্য, দুবাই ও সৌদি আরবের প্রবাসীরা এ সুযোগ পাবেন। পরে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও এ সুযোগ পাবেন। এ জন্য ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে।
এইচএস/জেডএ/এমএস