শিক্ষকদের সমাবেশ : শহীদ মিনার পুলিশের দখলে!
প্রাথমিক শিক্ষা ঐক্য পরিষদের আহ্বানে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার থাকলেও পুলিশি বাধার কারণে শিক্ষকরা সেখানে সমবেত হতে পারছেন না। বুধবার সকাল থেকে শহীদ মিনারের চৌহদ্দিসহ আশপাশের রাস্তায় বিপুল সংখ্যক পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কাউকে শহীদ মিনারের দিকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। কেউ যেতে চাইলেই পুলিশ তাদেরকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ কিংবা সরিয়ে দিচ্ছেন। সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষকরা বিছিন্নভাবে শহীদ মিনারের সামনে আসলেও কেউ শহীদ মিনারে অবস্থান করতে পারছেন না। তবে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা ঐক্য পরিষদের কাউকে দেখা যায়নি। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশের রাস্তায় ঘুরে ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা ঐক্য পরিষদ মহাসমাবেশ ডাকলেও ঢাকায় মহাসমাবেশে যোগ না দিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছুটির দিনে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ডিপিই’র মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদির স্বাক্ষরিত এমন নির্দেশনা জারি করা হয়। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকায় শিক্ষকদের মহাসমাবেশ পালনের ঘোষণা দেয়ায় এ নির্দেশনা জারি করা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষকরা ছুটে আসছেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘বুধবার (২৩ অক্টোবর) পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বার ছুটির দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক সংগঠন বিভিন্ন দাবি নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারেন বলে জানা গেছে। এ কারণে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ দিন ছুটি উপলক্ষে কর্মস্থল ত্যাগের অনুমতি না দিতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।’
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তনের দাবিতে গত ১৪ থেকে ১৭ অক্টোবর বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হলে আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) শিক্ষকরা রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছামছুদ্দীন মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষকরা তাদের অধিকার আদায়ে ছুটির দিনে আন্দোলন করতে পারবেন না, তা হতে পারে না। যত বাধাই থাকুক, আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি যথাসময়ে পালন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নিজেদের দাবি আদায়ে শিক্ষকরা কোনো হুমকি ভয় পান না, এ আন্দোলনে প্রায় পৌনে তিন লাখ শিক্ষক অংশগ্রহণ করছেন। মন্ত্রণালয় বিদ্যালয় ত্যাগের নির্দেশনা দিলেও বুধবার সরকারি ছুটি, এ দিন সব বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে আগত এক শিক্ষিকা জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকদের ১০তম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডের দাবিতে মহাসমাবেশ ডেকেছেন। গত বছরর আমরণ অনশনকালে তাদের দাবি অচিরেই পূরণ করা হবে বলা হলেও বাস্তবে তা ঘটেনি। তাই মহাসমাবেশে যোগ দিতে এসেছি। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা আমাদের শহীদ মিনারে যেতে দিচ্ছে না।
এদিকে শিক্ষকদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন প্রবেশদ্বার আজও বন্ধ করে রাখা হয়।
এমইউ/আরএস/জেআইএম