অবশেষে ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হচ্ছে সরকারি চাকরি আইন
অবশেষে আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হচ্ছে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’। বহুল প্রতীক্ষিত আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইনের গেজেট জারি হয়। সংবিধানে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য আইন প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ইতোপূর্বে কোনো সরকারই এ আইন প্রণয়ন করেনি। তারা বিধি, নীতিমালা ও প্রয়োজন মতো নির্দেশনাপত্র জারি করে সরকারি কর্মচারীদের পরিচালনা করছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন গত দুটি সরকারের সময় আইনটি করার জন্য কয়েক দফা খসড়া প্রণয়ন করা হলেও খসড়ার বিভিন্ন বিধান নিয়ে বিতর্ক ওঠায় কয়েক দফায় উদ্যোগ ভেস্তে গিয়েছিল।
সরকারি চাকরি আইনের গেজেট জারি হলেও আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে বিভিন্ন মহলের আপত্তি রয়েছে।
সরকারি চাকরি আইনে ৬২টি ধারা সংবলিত ১৩টি অধ্যায় আছে। এ আইনে সরকারি কর্মচারীদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। আইনে সরাসরি জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা ও উম্মুক্ত প্রতিযোগিতার বিধান রাখা হয়েছে। মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা, প্রশিক্ষণ ও সন্তোষজনক চাকরি বিবেচনাক্রমে পদোন্নতি প্রদানের বিধানও রাখা হয়েছে আইনে।
কোনো সরকারি কর্মচারীকে ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার করতে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণের উল্লেখ রয়েছে সরকারি চাকরি আইনে। আদালতে দণ্ডিত ও চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া কোনো ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি অব্যাহতি দিতে পারবেন এবং অনুরূপ আদেশের ফলে ওই কর্মচারী চাকরিতে পুনর্বহাল হতে পারবেন বলে আইনে উল্লেখ রয়েছে।
গত ২৩ জুন ‘জনপ্রশাসনে শুদ্ধাচার: নীতি ও চর্চা’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)। গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে সরকারি কর্মচারী আইনের কতিপয় মৌলিক ধারার সমালোচনা করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, সরকারি চাকরি আইন নামটিই সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। এ আইনটির নাম হওয়ার কথা ছিল জনপ্রশাসন আইন। তাই আমরা আইনটির নাম সংশোধনের দাবি জানাই। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতারের জন্য সরকারের পূর্বানুমতি গ্রহণের বিধিও সম্পূর্ণরূপে সংবিধান পরিপন্থী ও বৈষম্যমূলক। এই বিধিও বাতিল করতে হবে। এছাড়া এই আইনের ৬.১ ধারায় প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমস্ত কর্তৃত্ব সরকারের কাছেই রাখা হয়েছে, যা ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী’ এই সাংবিধানিক অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক।
তাই ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ এ ‘সরকারি’ শব্দটির পরিবর্তে ‘প্রজাতন্ত্র’ শব্দটি ব্যবহার করে সংশোধনের সুপারিশ করে টিআইবি।
আরএমএম/এসএইচএস/এমএস