ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিমানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবেন কি নতুন এমডি?

রফিক মজুমদার | প্রকাশিত: ০৭:৪১ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও পদে যোগ দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (বিমান ও সিএ) দায়িত্বে থাকা মো. মোকাব্বির হোসেন। যোগদানের পরপরই তিনি বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মনের আশার সঞ্চার করেছেন। সবারই আশা, নতুন এমডির সময়ে বিমান নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে।

বিমানে যোগ দিয়ে মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘নতুন কোনো এজেন্ডা, লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়, বিমানের নিজস্ব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সামনে রেখেই ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা হবে।’ যোগদানের পরপর বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় বসেন তিনি। সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের নির্দেশও দেন। একই সঙ্গে তিনি সবার সহযোগিতা কামরা করেন।

ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেছেন নতুন এমডি। গণমাধ্যমকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি। বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা অনেক অভিজ্ঞ, তাদের পরামর্শ আমাদের পথচলাকে আরও ত্বরান্বিত করবে।

২৭ বছর আগে বিমানে জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি করে গেলেও এ দফায় মোকাব্বির হোসেন ফিরেছেন সংস্থাটির সর্বোচ্চ পদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়ে।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের মে মাসে বিমানের ম্যানেজমেন্ট এন্ট্রি লেভেলে গ্রুপ ৩ (২) গ্রেডে ‘জুনিয়র কমার্শিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসেবে যোগ দেন মোকাব্বির হোসেন। টানা দেড় বছর চাকরি করেন তিনি। পরে বিসিএস (প্রশাসন) দশম ব্যাচে যোগদান করেন মোকাব্বির হোসেন। ছেড়ে দেন বিমানের চাকরি। গত ১২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিবের (বিমান ও সিএ) দায়িত্বে থাকা মো. মোকাব্বির হোসেনকে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিয়োগ দেয়।

এ প্রসঙ্গে মোকাব্বির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বিমানকে সন্তানের মতো লালন এবং সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করব। সবাইকে নিয়ে কাজ করব। সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা নিয়ে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করব।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে চলমান দুর্নীতির তদন্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, দুর্নীতির তদন্ত ও শাস্তি যথাযথ নিয়মে হবে। নিয়মের বাইরে কোনো কিছুই হবে না।

নতুন এমডি যোগদানের বিষয়ে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক পরিচালনাপর্ষদ সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, নতুনদের কাছ থেকে সব সময় মানুষ ব্যতিক্রম ও বেশি আশা করেন। সরকারি আমলা হলেও অতিরিক্ত সচিব মোকাব্বির হোসেন একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। আমরা আশা করি, তিনি বিমানকে ঢেলে সাজাবেন এবং কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছবেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাতে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ-কে তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়। ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে বিমানের পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশন্স) ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিলকে সে সময় দায়িত্ব দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি, সিইও ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে নিয়োগের জন্য গত ১২ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ১২ বিদেশিসহ প্রায় ৭০ প্রার্থী এ পদের জন্য আবেদনপত্র জমা দেন। তবে গত ছয় মাসেও আবেদনকারীদের মধ্য থেকে কাউকে চূড়ান্ত করতে পারেনি বিমান কর্তৃপক্ষ।

আবেদনকারীদের মধ্য থেকে নাকি নতুন কোনো পদ্ধতিতে এ পদে নিয়োগ দেয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৩ সেপ্টেম্বর বোর্ড সভায় আলোচনা করে পরিচালনা পর্ষদ। জানা গেছে, বোর্ড সভায় অতিরিক্ত সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনকে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব ওঠে।

বিমানের পরিচালনা পর্ষদ সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, ‘বিমান বোর্ড এমডি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। কিন্তু আবেদনকারী দেশি-বিদেশি কাউকেই এ পদের যোগ্য হিসেবে পাওয়া যায়নি। এজন্য বিমান বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিমানের এমডি পদে অতিরিক্ত সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনকে নিয়োগের আদেশ দেয়।

আরএম/এমএআর/জেআইএম