ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

মদের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রস্তাব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ দেশের প্রতিটি পাঁচতারা হোটেল ও নাইটক্লাবে বিয়ার এবং হার্ড ড্রিংকসের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্যও বলেছেন কমিটির সভাপতি। তবে অ্যালকোহলের ওপর কর হ্রাসের আগে সামাজিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন এক সদস্য।

সম্প্রতি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ষষ্ঠ বৈঠকে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে মদের দাম অনেক বেশি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে কমিটিতে আলোচনা হয়।

কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কাজী ফিরোজ রশীদ, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক এবং সৈয়দা রুবিনা আক্তার অংশ নেন।

বৈঠকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতেও অসংখ্য ছাতা ও বেঞ্চ বিছানো আছে, যা পর্যটকদের ভাড়া করে ব্যবহার করতে হয়। এগুলো বিচ কমিটি নিয়ন্ত্রণ করে বিধায় তাদের দ্বারা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

পর্যটকরা যাতে হয়রানিমুক্ত ও বিনা ভাড়ায় ছাতা এবং বেঞ্চ ব্যবহার করতে পারেন সে জন্য সমুদ্র সৈকতকে সিডিএর অধীনে নিয়ে কক্সবাজারে অবস্থিত পাঁচতারা ও চারতালা হোটেলগুলোকে এ দায়িত্ব দেয়ার সুপারিশ করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ দেশের প্রতিটি পাঁচতারা হোটেল ও নাইটক্লাবে বিয়ার এবং হার্ড ড্রিংকসের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার সুপারিশ করেন।

এরপর কমিটির সভাপতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ দেশের পাঁচতারা হোটেল ও নাইট ক্লাবে বিয়ার এবং হার্ড ড্রিংকসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর সাথে আলোচনার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। এ সময় কমিটির আরেক সদস্য তানভীর ইমাম পাঁচতারা, চারতারা ও তিনতারা হোটেলসমূহে অ্যালকোহলের ওপর কর হ্রাস করার পূর্বে সামাজিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেয়ার অনুরোধ জানান।

বৈঠকে অসম চুক্তির মাধ্যমে ইজিপ্টএয়ারের দুটি বিমান আনার ব্যাপারে আলোচনা হয়। এছাড়া হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৭১৪ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কমিটি।

সৈয়দা রুবিনা আক্তার অসম চুক্তির মাধ্যমে ইজিপ্টএয়ারের দুটি বিমান আনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে জরুরি ভিত্তিতে আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করেন। এছাড়া হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৭১৪ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতে হয়েছে কি না -তা তদন্ত করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

এছাড়া বিভিন্ন ট্রাভেলিং এজেন্সি কর্তৃক ভুয়া টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বিমানের যে সব কর্মকর্তা জড়িত, সে বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন সৈয়দা রুবিনা আক্তার।

সভাপতি বলেন, ত্রুটিপূর্ণ ইজিপ্টএয়ারের দুটি বিমান অসম চুক্তির মাধ্যমে লিজ নেয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্র কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং এ কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে কি না -সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া দরকার।

তিনি ইজিপ্টএয়ারের দুটি বিমান লিজের ব্যাপারে দশম জাতীয় সংসদের গঠিত সাব-কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন বর্তমান সাব-কমিটিকে সরবরাহ করে সহযোগিতার পরামর্শ দেন।

তানভীর ইমাম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৭১৪ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম নিরীক্ষার প্রস্তাব করেন।

পরে কমিটি এ বিষয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়েছিল কি না -তা তদন্তপূর্বক বিস্তারিত প্রতিবেদন স্থায়ী কমিটির আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনায় ইজিপ্টএয়ার থেকে লিজ নেয়া নষ্ট দুটি উড়োজাহাজের পেছনে প্রতি বছর ১২০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। মিসরের ইজিপ্টএয়ার থেকে ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের জন্য দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর ড্রাই লিজ নেয় বিমান। লিজ নেয়ার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই উড়োজাহাজ দুটি নষ্ট হয়ে যায়।

অন্যদিকে রাজধানীতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল সংস্কারে মোট ৬২০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া সংস্কারকাজ ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে গত বছর আগস্টে শেষ হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর এর উদ্বোধন করেন। এ বছরের জানুয়ারি থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম শুরু করে হোটেলটি। এত টাকা ব্যয়ে এ সংস্কারকাজে দুর্নীতি হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

এইচএস/আরএস/এমএস

আরও পড়ুন