ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

জুন জুলাই আগস্টে আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৩৩ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জুন, জুলাই ও আগস্ট– গত এ তিন মাসে টালমাটাল আচরণ করেছে দেশের আবহাওয়া। স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা যা থাকার কথা, তার চেয়ে বেশি থাকছে। স্বাভাবিকভাবে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা, তার চেয়ে বেশি বা কম হচ্ছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস থেকে জানা যায়, জুন, জুলাই ও আগস্টে স্বাভাবিকের চেয়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তি ছিল। জুন ও আগস্টে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়েছে। জুলাইয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়েছে বৃষ্টিপাত।

সেপ্টেম্বরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, আগস্টে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩ দশমিক ২ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এ মাসে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও শূন্য দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

আগস্টে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, জুলাই মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা বেশি ছিল। এ মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এবং খুলনা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়। আর জুলাইয়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১ ডিগ্রি ও দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

জুলাইয়ে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, জুনে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ১ দশমিক ৮ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হলেও সিলেটে জুনে স্বাভাবিক বৃষ্টি ছিল। জুনে সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন ও গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১ দশমিক ৮ ডিগ্রি, শূন্য দশমিক ৬ ডিগ্রি ও ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এগুলো একদমই অস্বাভাবিক আচরণ। এটা যদি ৩ থেকে ৪ বছর টানা ব্যতিক্রম হয় তাহলে জলবায়ুতে প্রভাব ফেলতে পারে।’

এ তিন মাস ছাড়াও গত দুই বছরেও দেশে আবহাওয়া অস্বাভাবিক আচরণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবার ফেব্রুয়ারিতে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। স্বাভাবিকভাবে ফেব্রুয়ারিতে এত বৃষ্টি হয় না। এ বছর ধরন কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। গত বছরও অনেকটা তাই ছিল। গত বছরও মার্চ, এপ্রিল, মে মাসে অনেক বৃষ্টি হয়েছে।’

বজলুর রশিদ আরও বলেন, ‘বর্ষাকালে যে বৃষ্টি হয়, বঙ্গোপসাগরে অনেকগুলো ডিসটার্বেন্স হয়। বিশেষ করে মুনসুন, মৌসুমী লঘুচাপ– এগুলো বেশি বেশি ঘটলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যায়। এবার অনেকগুলো সিস্টেম যেগুলো উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ ওই দিকে চলে গেছে। তাই বৃষ্টিপাত কম হয়েছে।’

আবহাওয়ার এ অস্বাভাবিক আচরণ অর্ধেক হলে সেটা জলবায়ুতে বড়ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে বলেও জানান তিনি।
সেপ্টেম্বরে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, আগস্টে ঢাকা বিভাগে ২২ দশমিক ৮ মিলিমিটার কম বৃষ্টিপাত হয়েছে, ময়মনসিংহ বিভাগে কম হয়েছে ৪২ দশমিক ৫ মিলিমিটার, চট্টগ্রাম বিভাগে কম হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি মিলিমিটার, সিলেট বিভাগে কম হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ মিলিমিটার, রাজশাহী বিভাগে কম হয়েছে ৩৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার, রংপুর বিভাগে কম হয়েছে ৩৫ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগে ৯ দশমিক ৩ মিলিমিটার কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। খুলনা বিভাগে ৬ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, আগস্টে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ১৩ থেকে ১৬ আগস্ট দেশের অনেক স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়। গত ২৩ আগস্ট এ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ২২২ মিলিমিটার রেকর্ড হয় টেকনাফে।

মৌসুমী বায়ু কম সক্রিয় থাকায় ৫ থেকে ৬ আগস্ট, ১১ থেকে ১২ আগস্ট ও ২২ আগস্ট দেশের পশ্চিমাঞ্চলের অনেক স্থানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এ সময় (১২ আগস্ট) আগস্ট মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় দিনাজপুরে ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলেও জানানো হয় দীর্ঘমেয়াদি বুলেটিনে।

পিডি/এনডিএস/এমএস

আরও পড়ুন