জনির শরীরে ৭ জখম, পিঠে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু
চট্টগ্রামে নিহত তরুণ জাকির হোসেন জনির (১৮) শরীরে জখমের সাতটি গভীর ক্ষতচিহ্ন পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রতিটি জখম করা হয়েছে খুবই ধারালো অস্ত্র দিয়ে। এর মধ্যে ডান পিঠে করা ছুরিকাঘাতে জনির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত জনির শরীর দেখার পর জাগো নিউজকে এসব বিষয়ে জানিয়েছেন সিআইডি পরিদর্শক এ এম ফারুক। এর আগে আজ বিকেল পৌনে ৩টার দিকে নগরের এমইএস কলেজের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
এ এম ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘ক্রাইম সিন পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে আমরা নিহত জাকির হোসেন জনির উপর করা আঘাতগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি। সারা শরীরে মোট সাতটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রতিটি আঘাত করা হয়েছে খুব ধারালো কিছু দিয়ে। এর মধ্যে ডান উরুতে একটি, বাম উরুতে তিনটি, ও পেছন দিকে দুটি জখম করা হয়েছে।’
সিআইডি পরিদর্শক এ এম ফারুক বলেন, ‘নিহতের শরীরে সবচেয়ে মারাত্মক আঘাত করা হয়েছে তার ডান পিঠে। যেটির আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করেছি। ছুরি তার পিঠ দিয়ে প্রবেশ করে ফুসফুস ফুটো করে দিয়েছে।’
হত্যাকাণ্ডের শিকার জাকির হোসেন জনি (১৮) সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীনের শ্যালক ও সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার কলাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। চার ভাই, দুই বোনের মধ্যে জনি সবার ছোট।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরের খুলশী আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কে কুতুব উদ্দীনের বাসায় থেকে পড়ালেখা করত জনি। সোমবার রাতে মায়ের সঙ্গে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল তার। আজ দুপুর দুইটার দিকে এমইএস কলেজ এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল জনি।
এ সময় শাওন ও আয়াত নামে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর সঙ্গে পূর্ব বিরোধের জেরে কথা কথাকাটি ও মারামারি হয়। পরে সেখান থেকে মারামারি করতে করতে কলেজের সামনে জাকির হোসেন সড়কে চলে আসে তারা। এক পর্যায়ে কলেজ ফটকের অদূরে ইক্যুইটি ভবনের সামনের রাস্তায় ফেলে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করা হয় জনিকে।
এদিকে কলেজ ছাত্রলীগে একাংশের নেতারা দাবি করেছে জনি ছাত্রলীগ কর্মী। রোববার এমইএস কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারি হয়। সেখানে জনিও ছিল। এর জের ধরে প্রতিপক্ষরা তাকে ছুরিকাঘাত করেছে।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রনব চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, রোববার ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারি হয়েছিল। এর জের ধরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করছি। এখন পর্যন্ত দুজন হত্যাকারীর নাম পেয়েছি।
এর আগে গত ২৮ জুলাই ওমরগণি এমইএস কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্র সংসদের ভিপি ওয়াসিম উদ্দিন ও জিএস আরশাদুল আলম বাচ্চুর মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে মো. আকিব নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছুরিকাঘাত করে প্রতিপক্ষরা। কলেজ মাঠে আহতের ছোট বোনের সামনেই এ ঘটনা ঘটে।
এমআরএম