ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

দু’জনই বিমানকর্মী, একজন পেলেন প্রশংসা অন্যজন শাস্তি

আদনান রহমান | প্রকাশিত: ০৫:৪৮ পিএম, ২০ আগস্ট ২০১৯

ঘটনাটি ৮ আগস্টের (২০১৯), হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামিল ডেকে পাঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুই ট্রাফিক হেল্পারকে। তারা হলেন- তানিয়া ও রিয়াদ উদ্দিন। তাদের কাজ বিদেশ ফেরত যেসব যাত্রী হুইলচেয়ার রিকুইজিশন দেন তাদের হুইলচেয়ারে বসিয়ে বিমান থেকে গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া।

ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামিল সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে বসে নজরদারি করছিলেন। তিনি দেখেন, তানিয়া এক বয়স্ক নারী যাত্রীকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে ক্যানপি পর্যন্ত নিয়ে যান। তাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে হুইলচেয়ার গুটিয়ে চলে যাচ্ছিলেন এ সময় ওই যাত্রীকে নিতে আসা এক ভদ্রলোক তানিয়াকে পিছন থেকে ডাকেন এবং টাকা বের করে তাকে দিতে চান।

সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সেখানেই আটকে ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়াকে ডেকে আনেন। টাকা না নেওয়ার কোনো বিধান না থাকলেও তানিয়া টাকা নিয়েছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়। তখন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তানিয়া বলেন, ‘আমাকে টাকা দিতে চেয়েছিল, আমি নেইনি। আপনি ভিডিও দেখতে পারেন।’

তানিয়ার দাবির সত্যতা যাচাইয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার রেকর্ড ফুটেজ দেখে ম্যাজিস্ট্রেট নিশ্চিত হন যে, তানিয়া ওই লোকের কাছ থেকে টাকা নেননি। এরপর নৈতিকতা ধরে রাখার জন্য তানিয়াকে একটি বই পুরস্কার দেন ম্যাজিস্ট্রেট। সাথে দেওয়া হয় একটি প্রশংসাপত্রও।

একই ধরনের কর্মকাণ্ডে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে ডাকা হয় রিয়াদ উদ্দিনকে। ভিডিওতে দেখা যায়, রিয়াদ এক যাত্রীর লাগেজ বেল্ট থেকে ট্রলিতে উঠিয়ে ট্রলি ঠেলে ক্যানপিতে নিয়ে যান। যাত্রী বয়সে তরুণ ও সুস্থ, তিনি হুইলচেয়ারে উপবিষ্ট নন। ক্যানপিতে যাওয়ার পর রিয়াদ উদ্দিন ওই যাত্রীর কাছ থেকে টাকা নেন।

পরে যাত্রীর লাগেজ ঠেলে বকশিশ নেওয়ার অপরাধে রিয়াদ উদ্দিনকে সামান্য জরিমানা করেন ম্যাজিস্ট্রেট। একই সঙ্গে ‘শাস্তি’ হিসেবে তাকেও একটি বই দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এ দুটি ঘটনা জানিয়েছেন বিমানবন্দরের আরেক ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আরেফিন রেজওয়ান। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ জামিল রিয়াদকে বইটি পড়ার জন্য সাতদিন সময় দিয়েছিলেন। ঈদের ছুটি থাকার কারণে আজ (মঙ্গলবার) লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এটা তার শাস্তির অংশ।

ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আরেফিন বলেন, ‘বিদেশ ফেরত যাত্রীরা যারা হুইলচেয়ার রিকুইজিশন দেন তাদের হুইলচেয়ারে বসিয়ে প্লেন থেকে গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া তাদের (হেল্পর) কাজ। এ হুইলচেয়ার সার্ভিস চার্জ টিকিটের মূল্যের সাথে আগেই রেখে দেওয়া হয়। ফলে যারা হুইলচেয়ার ঠেলেন তাদের আলাদা করে পারিশ্রমিক দেওয়ার দরকার হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দরে তানিয়াদের সংখ্যা কম। রিয়াদ উদ্দিনদের সংখ্যা অনেক বেশি। নিজের কাজ ফেলে যাত্রীদের লাগেজ ঠেলে এবং টাকা নিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে প্রতিদিনই কেউ না কেউ শাস্তি পাচ্ছে।’

এআর/আরএস/জেআইএম

আরও পড়ুন