দুধ বিতর্ক : নীরব মন্ত্রীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ
দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে বলে বিতর্ক ওঠার সময় মন্ত্রিসভার নীরব সদস্যদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লন্ডন সফর শেষে দেশে ফেরার পর সোমবার (১৯ আগস্ট) মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
গত ২৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক (বর্তমানে অবসরে) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। মিল্ক ভিটাসহ সাত ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত (পাস্তুরিত) দুধের নমুনা পরীক্ষা করে সেগুলোতে মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, পরীক্ষায় পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার সবগুলোতেই লেভোফ্লক্সাসিন ও সিপ্রোফ্লক্সাসিন এবং ছয়টি নমুনায় এজিথ্রোমাইসিনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এ সময় দেশজুড়ে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। দুধ পান করা নিয়ে সংশয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। ওই সময় চোখের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে অবস্থান করছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত এক মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন- ওই গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশের পর দুধ পান করা যাবে কি যাবে না, দেশবাসীর মনে যখন এ প্রশ্ন জেগেছিল, তখন সরকারের মন্ত্রীরা কেন নীরব ছিলেন?
মন্ত্রিসভার সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুধ নিয়ে যখন সারাদেশে তোলপাড়, পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি, টিভিতে টকশো হচ্ছিল, তখন আপনারা কী করছিলেন? কারো মুখে তো এ বিষয়ে কোনো কথা আমি দেখিনি।’
‘প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন- কথা নেই বার্তা নেই একজন শিক্ষক গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশ করলেন। বলে দিলেন দুধ ব্যবহারযোগ্য নয়। সঙ্গে সঙ্গে সেটা নিয়ে আদালতে রিট করা হয়। তিনি (ফারুক) যে গবেষণা করেছেন, সেটা কোন প্রক্রিয়ায় করেছেন? গবেষণার যথাযথ অনুমতি নিয়েছেন কি-না? গবেষণার ফল কোন জার্নালে প্রকাশ হয়েছে?’
মানুষ যদি সবই ভেজাল খায়, তা হলে গড় আয়ু বাড়ে কীভাবে- প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন ৭০-৭৫ বছর অনায়াসেই আয়ু পাচ্ছে মানুষ। কিছু কিছু দুর্ঘটনার হার কমানো গেলে গড় আয়ু আরও বাড়ত।’
আরএমএম/ এএইচ/এমকেএইচ