ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনায় নিহত ২৫৩
ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌ পথে সম্মিলিতভাবে ২৪৪টি দুর্ঘটনায় ২৫৩ জন নিহত ও ৯০৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সড়কেই ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২২৪ জন নিহত, ৮৬৬ জন আহত হন।
ঈদের আগে ও পরে ১২ দিনে এসব ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
রোববার রাজধানীর ডিআরইউ সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০১৯ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, এবারের ঈদে বিগত বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা ৬.৪০ শতাংশ, নিহত ৬.২৫ শতাংশ ও আহত ১.৫০ শতাংশ কমেছে। এ বছর মোট সংঘটিত ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনার ৬৭টি ঘটেছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে অন্য যানবাহনের সংঘর্ষে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩ শতাংশ। যেখানে মোট নিহতের ৩৪.৩৭ শতাংশ এবং মোট আহতের ৮.৪২ শতাংশ।
অন্যদিকে পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা ৫২.২১ শতাংশ ঘটেছে। আগামী ঈদে এ দুটি ঘটনা এড়ানো সম্ভব হলে সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ৮৫.২১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৬ আগস্ট থেকে কর্মস্থলে ফেরা (১৭ আগস্ট) পর্যন্ত বিগত ১২ দিনে ২০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২৪ জন নিহত ও ৮৬৬ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় ৩৭ জন চালক, ৩ জন শ্রমিক, ৭০ জন নারী, ২২ জন শিশু, ৪২ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৩ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৩ জন রাজনৈতিক নেতা, ৯০০ জন যাত্রী ও পথচারী সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।
উল্লেখিত সময়ে রেল পথে ট্রেনে কাটা পড়ে ১১টি, ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে একটি, ট্রেন যানবাহন সংঘর্ষে একটি, ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার একটি ঘটনায় ১৩ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে নৌ-পথে ২৪টি ছোটখাট বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ৫৯ জন নিখোঁজ ও ২৭ জন আহত হয়েছেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য ৪১টি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক ১১টি অনলাইন দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
বিগত ৪ বছরের পবিত্র ঈদুল আজহায় ঈদযাত্রায় সড়ক পথে দুর্ঘটনার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ১৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৪৮ জন, আহত ১ হাজার ৫৫ জন, ২০১৭ সালে ২১৪ দুর্ঘটনায় নিহত ২৫৪ ও ৬৯৬ আহত, ২০১৮ সালে ২৩৯ দুর্ঘটনায় নিহত ২৫৯ জন, আহত ৯৬০ জন এবং এবারের ঈদুল আজহায় ২০৩ দুর্ঘটনায় নিহত ২২৪ জন, আহত ৮৬৬ জন। দুর্ঘটনার পাশাপাশি নিহতের সংখ্যা কমেছে।
সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৭.৪ শতাংশ বাস, ২৬.৩৩ শতাংশ মোটরসাইকেল ১৬.৪ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, লরি, ৭.৮২ শতাংশ কার-মাইক্রো, ১৩.৫২ শতাংশ অটোরিকশা, ৩.৫৫ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৪.৯৮ শতাংশ ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।
সংঘটিত দুর্ঘটনার ২১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৫২.২১ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায় ও ৯.৮৫ শতাংশ অনান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’র নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ,যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল ও যাত্রী কল্যাণ সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান তাওহিদুল হক লিটন।
জেইউ/জেএইচ/এমএস