চামড়ার বর্জ্য অপসারণে হিমশিম খেলেন পরিচ্ছন্নকর্মীরা
হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে রাস্তার ওপর কেউ লম্বা চাদর বিছিয়ে রেখেছে। বৃষ্টি কাদাপানিতে চাদরটি নোংরা হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্জ্য অপসারণকারী গাড়িটি যখন রাস্তা থেকে নিয়ে ময়লার গাড়িতে তুলছিলেন তখন দেখা গেল এটি চাদর নয় কোরবানির গরুর চামড়া! আশপাশে তাকাতেই দেখা গেল কোরবানির পশুর পরিত্যক্ত মাথা ও শিংয়ের স্তূপেরর পাশে অসংখ্য গরু-ছাগলের চামড়া পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে।
এ দৃশ্য আজ বুধবার দুপুর ২টায় রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকার চামড়ার আড়তের আশপাশের রাস্তার।
চলতি বছর ঈদে গরু ও ছাগলের চামড়ার দাম গত তিন দশকের ইতিহাসের সবচেয়ে কম হওয়া ও আড়তে দেরিতে পৌঁছানোর কারণে চামড়ায় পচন ধরায় মৌসুমি চামড়া বিক্রেতাদের অনেকেই চামড়া রাস্তায় ফেলে চলে যান। পোস্তা এলাকার রাস্তাঘাটজুড়েই এখন পরিত্যক্ত চামড়াসহ গবাদি পশুর বর্জ্যের ছড়াছড়ি।
পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দু-তিন দশকে এত চামড়া আর কোনো দিন নষ্ট হয়নি। এত বর্জ্যও কোনো দিন রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়নি।
আজ দুপুরে পোস্তা ঘুরে দেখা গেছে, ডিএসসিসির বর্জ্য অপসারণে ব্যবহৃত একাধিক গাড়ি ব্যস্ত সময় পার করছে। বর্জ্যের স্তূপ এত বেশি যে, অটোমেটিক মেশিন চালিয়ে সেগুলো গাড়িতে তোলাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছিল!
ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নকর্মী রমিজ জানান, বিগত বছরগুলোতে ঈদের পরদিনই পোস্তার প্রায় সব বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ হতো। কিন্তু এবার অনেক চামড়া নষ্ট হওয়ায় কয়েকটি অটোমেটিক যন্ত্রচালিত গাড়িতে তুলেও বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না।
সেলিম নামে পোস্তার এক শ্রমিক জানান, অন্যান্য বছর মাথার চামড়া বিক্রি করে ঈদের দু'দিনে ৬-৭ হাজার টাকা আয় করলেও এবার মাথার চামড়া কোনো আড়তদার কিনতে চাননি! অসংখ্য মাথার চামড়া রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এমইউ/এসএইচএস/এমএস