অফিস খুললেও স্বরূপে ফেরেনি ঢাকা
কর্মব্যস্ত রাজধানীতে ব্যস্ততার শেষ নেই। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাড়ির টানে ব্যস্ত নগরী ছেড়ে কোটি মানুষ পাড়ি জমিয়েছে গ্রামের বাড়ি। ঈদুল আজহার তৃতীয় দিন বুধবার নির্ধারিত সরকারি ছুটি শেষে খুলেছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। কিন্তু এখনও ব্যস্ত রাজধানীতে প্রাণ ফেরেনি। চারদিক এখনও ফাঁকা।
ঈদুল আজহার তিনদিনের সাধারণ ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে বুধবার সকাল থেকে ঢাকায় ফিরছে নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়া মানুষ। তবে ছুটির আমেজ যেন শেষ হয়নি এখনও। চিরচেনা রূপে ফেরেনি রাজধানী। নেই কোলাহল। পুরো নগরী বলতে গেলে ফাঁকা।
দুপুরে রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, ধানমন্ডি, কলাবাগান, ফার্মগেট, মতিঝিল, শাহবাগ, মহাখালীর মতো ব্যস্ততম এলাকা সরেজমিনে দেখা যায়, মানুষের পদচারণা কম। প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল চলাচল করছে। তবে গণপরিবহনের সংখ্যা খুবই কম।
প্রতিদিন যে এলাকা লাখো মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে, কালো ধোঁয়া আর যানজট যে স্থানটিকে প্রায়ই স্তব্ধ করে তোলে সেই বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে এখনও লোকারণ্যে রূপ নেয়নি। রাজধানী ঢাকার এ রূপ অবিশ্বাস্য। কেবল ঈদুল ফিতর কিংবা ঈদুল আজহায় রাজধানীতে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। অন্যদিকে সচিবালয় এলাকায় চোখে পড়েনি চিরচেনা যানজট। ফুটপাতে নেই হকার, সড়কে নেই ট্রাফিক জ্যাম।
বাস ও রিকশা চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে যে সব গন্তব্যে যেতে এক-দেড় ঘণ্টা সময় লাগতো এখন রাস্তা ফাঁকা হওয়ায় ১৫-২৫ মিনিটের মধ্যে চলে যাচ্ছেন। তবে যাত্রী কম থাকায় উপার্জনও কম।
মাসুদ রানা নামে বেসরকারি অফিসের এক কর্মকর্তা সকালে কল্যাণপুরে নেমে জানান, এবার তিনদিন অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছিলেন ঈদের আগেই। এর সঙ্গে সাধারণ ছুটি তিনদিন। সব ছুটি শেষ কর্মস্থলে যোগদানে সিরাজগঞ্জের গ্রামের বাড়ি থেকে থেকে ঢাকায় ফেরা।
সদরঘাট থেকে গাজীপুরগামী সুপ্রভাত পরিবহনের বাসচালক শিপন হালদার বলেন, ‘শুধু সদরঘাট থেকে গাবতলী পৌঁছতেই আগে সময় লাগতো আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। সেখানে মাত্র আধাঘণ্টায়ই গাবতলী পৌঁছানো যাচ্ছে। এখনও রাস্তা একদম ফাঁকা, কোনো যানজট নেই।’
সুজন আলী নামে ওয়েলকাম বাসের যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘গাইবান্ধা থেকে সকালে ঢাকায় নেমেছি। এরপর মিরপুরের বাসা থেকে গিয়েছি মোহাম্মদপুরে খালার বাসায়। সেখানে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিয়েছি। একটু পর অফিসে যাব। আজ ঢাকায় যেন সব অন্যরকম। দ্রুতই গন্তব্যে পৌঁছতে পারছি। ইশ! যদি সব সময় দ্রুতই গন্তব্যে পৌঁছতে কিংবা প্রয়োজনে ঢাকায় এভাবে চলাচল করা যেত!’
সরেজমিনে দেখা যায়, রেল, লঞ্চ ও বাস টার্মিনালগুলোতে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে। মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনালে বিভিন্ন জেলা শহর থেকে একের পর এক ঢুকছে গণপরিবহন। তবে বাস টার্মিনাল থেকে বাস পেতে কিংবা সিএনজি পেতে একটু বেগই পেতে হচ্ছে সাধারণা যাত্রীদের।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফেরি করে চা-পান বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এমনে সময়ে এ এলাকায় মানুষে ঠাসা থাকে। ক’দিন ধরে কাস্টমার খুঁজেই পাওয়া যায় না। প্রাণ নেই এ এলাকায়। তবে দুপুরের পর থেকে অফিসগামী মানুষজনের আনাগোনা বাড়তে শুরু করেছে।’
জেইউ/এনডিএস/পিআর