‘হাজি সাবরে কইছি, মাল রাখেন যা খুশি দিয়েন’
কুমিল্লার দাউদকান্দির মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টায় পোস্তার একটি আড়তের সামনে ট্রাকে করে ১৭০ পিস গরুর চামড়া নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ছোট-বড় মিলে গ্রাম থেকে চামড়া কেনা ও ট্রাক ভাড়াসহ প্রতি চামড়ার দাম পড়েছে ৪৫০ টাকা। কিন্তু আড়তদাররা কেউ চামড়া কিনতেই চাইছেন না।
অনেক ঘোরাঘুরির পর একজন আড়তদার রাজি হয়েছেন। তবে তিনি বাছাই করে শুধু বড় চামড়া নেবেন। আর প্রতি পিস চামড়ার দাম দেবেন ১৮০ টাকা। তাও আবার টাকা দেবেন ৭ দিন পর।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) বিকেলে ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা ধরে ৩০০ পিস চামড়া বিক্রি করেছি। কিন্তু আজ সকালে কেউ নিতেই চাইছেন না। এখন এ মাল নিয়ে কোথায় যাব, কি করব, তাই আড়ৎ মালিক হাজি সাবরে কইছি আপনি মাল রাখেন, যা খুশি তাই দাম দিয়েন। এছাড়া আর কিইবা করার আছে, বলেন। এবার চামড়ায় বড় লস খামু।'
তাজুল ইসলামের মতো আরও অনেকেই বিলম্বে চামড়া নিয়ে এসে চরম বিপাকে পড়েছেন। পোস্তার ক্রেতারা তাদের চামড়া কিনতে চাইছেন না। যাচ্ছেতাই দাম বলছেন।
মৌসুমী চামড়ার ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা পোস্তার আড়তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দাম কেমন যাবে সে সম্পর্কে ধারণা নিয়েই চামড়া কিনেছিলেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে পোস্তার ব্যবসায়ীরা শুরু থেকেই চামড়ার দাম কম বলছেন। সোমবার কিছুটা লাভে বিক্রি করতে পারলেও আজ (মঙ্গলবার) চামড়া কেনার ক্ষেত্রে তারা কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার চামড়া কেনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ তাদের কাছে নেই। ট্যানারি মালিকরা চামড়া কেনার জন্য তাদের আগের পাওনা থেকে কিছু টাকা দিয়েছেন। তাই তারা বেশি দামে চামড়া কিনতে পারছেন না।
এছাড়া মৌসুমী ব্যবসায়ীরা না বুঝে চামড়া কিনে ধরা খেয়েছেন বলেও অভিযোগ করছেন তারা।
এমইউ/আরএস/জেআইএম