কেউ ঘুমে কেউ মজুরির অপেক্ষায় রাতের শ্রমিকরা!
লালবাগ শাহী মসজিদে প্রবেশপথের সামনের বারান্দা ও সিড়িতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় কয়েকজন তরুণকে গভীর ঘুমে অচেতন। একই স্থানে ঢুলুঢুলু চোখে আরও কয়েকজনকে বসে থাকতে দেখা গেল। ওরা পোস্তার রাতের শ্রমিক।
সোমবার দুপুর থেকে ওদের কেউ চামড়া আড়তে নামানোর কাজে আবার কেউবা চামড়ায় লবণ লাগানোর কাজে ব্যস্ত ছিল। রাতভর কাজ করে ভোরে ক্লান্ত শরীর এলিয়ে শুয়ে পড়েছেন মসজিদের বারান্দা ও সিড়িতে। যারা জেগে ছিলেন তারা সবাই মজুরির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, তারা পেশায় কেউ-ই পোস্তার চামড়ার নিয়মিত শ্রমিক নন। কেউ স্যানিটারি মিস্ত্রি, কেউ নির্মাণ শ্রমিক, কেউ রাজমিস্ত্রির যোগালি আবার কেউবা শাকসব্জি বিক্রেতা। লেবার সর্দারের মাধ্যমে তারা একদিনের জন্য পোস্তার আড়তে কাজ করতে এসেছেন।
পটুয়াখালীর বাসিন্দা মোহাম্মদ সামিউল নামের এক শ্রমিক জানান, সোমবার সকাল ১১টা থেকে তিনি আড়তে কাজ করছেন। এখনও পর্যন্ত ঘুমাননি।
তিনি আরো জানান, বিভিন্ন আড়তে দু'ধরনের শ্রমিক কাজ করেছেন। একদল শ্রমিক ট্রাক থেকে চামড়া নামিয়ে আড়তে নিয়ে ভাজ করে রেখেছেন। এরা চামড়া প্রতি ২০ টাকা মজুরি পাবেন। আরেকদল চামড়ায় লবণ লাগানোর কাজ করেছেন। তারা চামড়া প্রতি ৪০ টাকা মজুরি পাবেন।
শ্রমিকরা জানান, সোমবার দুপুর থেকে শুরু করে সারারাত ট্রাক থেকে চামড়া নামানো ও চামড়ায় লবণ লাগানোর কাজ করেছেন। সারাদেশের চামড়া পোস্তায় নিয়ে আসায় রাস্তা ভর্তি ট্রাক ছিল।
শামীম নামের এক শ্রমিক জানান, তিনি সোমবার থেকে ভোর পর্যন্ত ১০০টি চামড়ায় লবণ লাগিয়েছেন। কষ্ট হলেও হাজার চারেক টাকা পাবেন ভেবে না ঘুমানোর কষ্ট ভুলে রয়েছেন।
তবে প্রায় সবাই জানালেন, মজুরি কখন পাবেন কেউ জানেন না। মালিকরা টাকা না দিয়েই সকালে বাড়ি গেছেন। দুপুরের দিকে হয়তো মজুরি পেতে পারেন।
এমইউ/এএ/জেআইএম