এতিমের হকের চামড়ার মুনাফা কার পকেটে?
রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী একটি এতিমখানার পরিচালনা কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন। সোমবার (১২ আগস্ট) সারাদিন পাড়া-মহল্লা থেকে মাদরাসায় দান করা এবং কিছু চামড়া কিনে বিকেলে ট্রাক ভাড়া করে ঢাকেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন পুরোনো আজাদ পত্রিকা অফিসের সামনে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। চামড়ার দাম শুনে কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে মাদরাসার কথা অনেকবার বলেকয়ে সামান্য মুনাফায় শতাধিক চামড়া বিক্রি করেন তিনি।
প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এবারের মতো চামড়ার এত কম দাম আর কখনও ছিল বলে মনে হয় না। তিন বছর আগে যে চামড়া ৩ হাজার টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে, আজ সে চামড়া ৫শ’ টাকাও বলছে না। সবাই বলছে চামড়ার বাজার মন্দা। খুব জানতে ইচ্ছে করছে, এতিমের হকের চামড়ার লাভের টাকা কার পকেটে যাচ্ছে? জানি না কারা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম এতটা কমাল।’
সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকেই কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে অন্যান্য বছরের মতো মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দেখা যায়নি। হাতেগোনা কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী এক থেকে দেড় লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া ৫শ’ টাকার বেশি দাম বলেননি। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দুপুর অবধি চামড়া পড়ে থাকতেও দেখা গেছে।
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা দোষারোপ করেন পোস্তার ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে পোস্তার ব্যবসায়ীরা দোষ দেন ট্যানারি মালিকদের। তারা বলেন, সরকার প্রতি ফুট চামড়ার দাম ৫০ টাকা বেধে দিলেও তারা নানা অজুহাতে ওই দামে চামড়া কিনছেন না।
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাঁচ বছর পর চামড়ার বাজার বলে আর কিছু থাকবে না। তবে পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, হিসাব করে যারা চামড়া কিনেছেন তাদের লোকসান হবে না।
তারা জানান, চামড়া কেনার জন্য তারা ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে কোনো টাকা পাননি। এছাড়া সরকারি দাম বেধে দিলেও সেই চামড়া কি লবণজাত করার আগে না পরে তা উল্লেখ করে দেয়নি। এ কারণে তারা এবার চামড়া কম কিনছেন।
তবে পোস্তায় ঘুরে ব্যবসায়ীদের কথার মিল পাওয়া যায়নি। দুপুরের পর থেকে ট্রাক ভর্তি চামড়া পোস্তার বিভিন্ন আড়তে নামিয়ে লবণ দেয়ার কাজ চলতে দেখা যায়।
আজিমপুর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর কী হয়েছে জানি না, এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দামের গরুর চামড়া কেনার লোকই পাইনি। পরে চামড়াটি এক মাদরাসায় দান করে দিয়েছে।
এমইউ/আরএস/পিআর