ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

১২ জাতের গরুর মাংস, ভাগা মাত্র ২৫০ টাকা

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল | প্রকাশিত: ০৭:৫৩ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৯

‘অ্যাই যে, লন লন, ১২ জাতের গরুর মাংস, ভাগা মাত্র ২৫০ টাকা।’ সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেল রাজধানীর আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের অদূরে ফুটপাতে মাংসের ভাগা সাজিয়ে এভাবেই চিৎকার করে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন কয়েকজন যুবক। ফুটপাতের পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষও উঁকি মেরে দেখছিলেন।

মাংস বিক্রেতার দিকে তাকিয়ে একজন বলেন, ‘মাংসের টুকরাতো কম, বেশিরভাগই পর্দা’ -এ কথা শুনে বিক্রেতা ওঠে বলেন, ‘মাংস কি আমার বাপের টাকায় কেনা। ১২ জনের গরুর মাংস কুড়িয়ে এনে মিশিয়ে বিক্রি করছি। পছন্দ হইলে লন, না হইলে যান।’

বিক্রেতার মুখে এ কথা শুনে রাগ হয়ে পাশের দোকানে গিয়ে মাংসের ভাগার দাম ৬০০ টাকা শুনে ফিরে এসে দুই ভাগা নেন ওই ব্যক্তি। মাংস বিক্রেতা ও ক্রেতা দু'জনেই আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তাদের একজন সারাদিন বাড়ি বাড়ি ঘুরে মাংস সংগ্রহ করে তা বিক্রি করছেন, আরেকজন নিজের কোরবানি দেয়ার সামর্থ নেই বলে এখান থেকে মাংস কিনে নিচ্ছেন।

Eid-Gosto

প্রতি বছরের মতো এবারও আজিমপুর বটতলা, পুরাতন কবরস্থান ও আশেপাশের ফুটপাতে মাংস বিক্রির এমন হাট বসেছে। কেউ ফুটপাতে হুগলাতে (চাটাই) সাজিয়ে, কেউ প্লাস্টিকের বোলে রেখে আবার কেউবা প্লাস্টিকের ব্যাগে রেখেই মাংস বিক্রি করছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, এ হাটে কেজি বা এক দামে মাংস বিক্রি হয় না। অনুমানে পরিমাণ নির্ণয় ও মাংসের গুণগত মান হিসাব করে সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা থেকে ১২শ’/১৪শ’ টাকা ভাগা মাংস বিক্রি হচ্ছে। বাজারের ক্রেতাদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের মানুষ। যারা ঢাকা শহরে খেয়েদেয়ে বেঁচে আছেন কিন্তু নিজে পশু কোরবানি দিতে পারেন না। মূলত তারাই দরদাম করে ঈদের বিকেলে এসব মাংস কিনে নিচ্ছেন।

Eid-Gosto

কামরাঙ্গীরচরে মা ও বোনকে নিয়ে থাকেন আবদুর রহিম নামে এক যুবক। নিউ মার্কেটে একটি শাড়ির দোকানে মাসিক ৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন। প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, যা বেতন পাই তা দিয়ে ঘরভাড়া ও খাওয়া-দাওয়াতে খরচ হয়ে যায়। আর্থিক অক্ষমতার কারণে সারাবছর মাংস কিনে খাওয়া হয় না। ঈদের দিন মা ও বোনকে নিয়ে মাংস খেতে ইচ্ছে করায় এখান থেকে এক ভাগা মাংস সাড়ে ৩শ' টাকায় কিনে নিলাম।

Eid-Gosto

শুধু আবদুর রহিম নন, তার মতো অনেকেই ক্ষণিকের এ মাংসের বাজার থেকে মাংস কিনছেন। একজন বিক্রেতা পেশায় ভিক্ষুক। তিনি বলেন, সারাদিন ঘুরে কেজি পাচেক (পাঁচ কেজি) মাংস পেয়েছি। ঘরে ভাতের চাউল নেই। তাই দুই কেজি মাংস ৮০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। এ টাকা চাউল আর ডাল কিনে বাসায় যাব। তিন কেজি মাংস রান্না করে সবাইকে নিয়ে খাব।

এমইউ/আরএস/পিআর

আরও পড়ুন