কোরবানির নির্ধারিত স্থান প্রস্তুত, থাকছে ইমাম-কসাই
দ্রুত বর্জ্য অপসারণ আর নগরবাসীর সুবিধায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মোট ৬৪৫টি নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানির অনুরোধ করেছেন দুই মেয়র। নাগরিকদের কোরবানি সংক্রান্ত যাবতীয় সুবিধা রয়েছে এসব স্থানে। থাকবে পানি, ছুরি, পশু জবাইয়ের জন্য ইমামসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ সেবা।
পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র একদিন বাকি। ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে এসব চিহ্নিত জায়গা। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি সূত্র জানায়, এ বছর ঢাকার উত্তরের ৫৪টি ওয়ার্ডে পশু কোরবানির জন্য ২৭০টি স্থান নির্ধারিত করা হয়েছে। একইভাবে দক্ষিণের ৭৫টি ওয়ার্ডে ৩৭৫টি জায়গা।
রোববার রাজধানীর বংশাল, আরমানিটোলা, নাজিমুদ্দিন রোড, মালিবাগ, ফকিরাপুল, মগবাজার, ইস্কাটনসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বাঁশ দিয়ে প্যান্ডেল টাঙিয়ে পশু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থানগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। মগবাজারে ইস্পাহানি স্কুলের পাশে এবং সোনালী ব্যাংকের নিচে, পুরান ঢাকার আরমানিটোলা, বংশাল, লালবাগ, চাঁনখারপুলসহ প্রতিটি এলাকায় কমপক্ষে দুটি করে স্থান চোখে পড়েছে।
প্রতিটি নির্ধারিত স্থানের ‘পশু রাখার নির্ধারিত স্থান’ সম্বলিত ব্যানার টাঙানো হয়েছে। প্রায় ২০০ বর্গফুটের মতো জায়গা নিয়ে এর চারপাশে বাঁশ দিয়ে কর্ডন করা হয়েছে। উপরে এবং পেছনে প্যান্ডেল।
এছাড়াও নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের সঙ্গে পানির সুব্যবস্থা, জবাইকারীর (ইমাম) সুব্যবস্থা, রোদ-বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা পেতে ছামিয়ানা, বসার জন্য চেয়ার, মাংস পরিবহনের জন্য ভ্যান, নাড়ি-ভুঁড়ি পরিষ্কারের জন্য শ্রমিক ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য সার্বক্ষণিক শ্রমিক ও গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রোববার সরেজমিনে এসব ব্যবস্থা না দেখা গেলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কসাইসহ শ্রমিকের সুবিধা পেতে কাউন্সিলরের জন্য আগে থেকেই যোগাযোগ করতে হবে।
ফাহিম আসহাব নামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (ফকিরাপুল) স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এই উদ্যোগটা অনেক ভালো তবে আমাদের পরিবারের লোকজন পশু জবাই দেখতে চায়। এছাড়াও এসব স্পট থেকে মাংস বাসায় বহন করা কঠিন। এ কারণে আমি ও আমাদের আশপাশের কোনো বাসার কেউ ওখানে যাই না। তবে আমরা নিজ উদ্যোগে কোরবানির বর্জ্য ব্যাগে ভরে নির্ধারিত স্থানে ফেলে আসি।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৫টি পশু কোরবানির নির্ধারিত স্থান রয়েছে। সেখানে প্যান্ডেল, পানি, ইমাম সাহেবসহ যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হবে। আপনারা অনুগ্রহ করে সেখানে পশু কোরবানি করবেন। যদি সেখানে কোনো কারণে পশু কোরবানি দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে যেখানেই কোরবানি করবেন সেখানে পানি কিংবা রক্ত জমতে দেবেন না। পশুর রক্ত পানি দিয়ে ধুয়ে সেখানে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে দিতে হবে। এছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সবাইকে বড় ব্যাগ দেয়া হবে। সেই ব্যাগে বর্জ্য ঢুকিয়ে নির্ধারিত স্থানে রাখবেন। আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা গিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করবেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন। যদি কোরবানির বর্জ্য, পানি, রক্ত ইত্যাদি অপসারণ না করা হয় তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। কারও এলাকায় যদি বর্জ্য থেকে যায় তাহলে তিনি হটলাইনে (০৯৬১১০০০৯৯৯) ফোন দেবেন। হটলাইনে অপারেটররা আপনার বাসা-বাড়ি কিংবা এলাকায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী পাঠিয়ে দেবেন। এছাড়া বর্জ্য অপসারণের সার্বিক কাজ ফেসবুকে তদারকি করা হবে।
উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল আজহায় দেশের ১২সিটি কর্পোরেশনে পশু কোরবানির জন্য ২৯৪১টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
এআর/বিএ/পিআর