ছাদেও জায়গা নেই একতার
বিমানবন্দর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করল, অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস আসবে। সঙ্গে সঙ্গে কয়েক’শ মানুষ প্লাটফর্মের পাশে এসে দাঁড়ালো। দুপুর পৌনে ১টার দিকে ট্রেনটি আসতে দেখে অনেকেই হতাশ ও বিপদগ্রস্ত। কারণ ট্রেনটির ভেতর ও ছাদে কোনো ফাঁকা জায়গা নেই। অধিকাংশ দরজা, জানালা বন্ধ। ফলে বিমানবন্দরে অপেক্ষায় থাকা বেশিরভাগ যাত্রীদের যাওয়া হলো না।
ট্রেনটি ছাড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখা যায়, ‘ও ভাই, ও ভাই, দরজার খোলেন’- এমন ভাবে অনেকেই আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু দরজা খুলছে না ভেতর থেকে। অনেকে দরজায় হাত চাপড়াচ্ছেন। তাতেও কাজ হচ্ছে না। অল্প যে কয়েকটি দরজা খোলা ছিল ট্রেনটির, তাতেও যাত্রীতে পূর্ণ। পা ফেলার জায়গাও নেই।
এমন অবস্থায় স্টেশন কর্তৃপক্ষ মাইকে বারবার ঘোষণা করছে, দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মকর্তারা যাত্রীদের ট্রেনে উঠতে সহায়তা করুন। জায়গা না থাকায় এই আহ্বানও কাজ হতে দেখা গেল না।
অনেকেই ভেতরে জায়গা না পেয়ে ট্রেনের ছাদে উঠার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ প্লাটফর্মের টিনের ছাদে উঠে ট্রেনের ছাদে আসার চেষ্টা করলেন। ছাদেও জায়গা না থাকায় তাদেরও অনেকে ব্যর্থ হয়ে নেমে পড়েন।
ট্রেনটি ছেড়ে দিলে অনেকেই ঝুলে ঝুলে যাত্রা করেন। তারপরও অনেককেই একতা এক্সপ্রেসে করে ঈদ যাত্রা করতে পারেননি।
মো. রফিকুল, রেজাউল করিম, মো. মিরাজ ইসলাম ও মো. রুবেল- এমনই পাঁচজন। যারা ট্রেনটির ছাদে উঠতে স্টেশনের টিনের ছাদে উঠেছিলেন। কিন্তু ট্রেনের ছাদে জায়গা ফাঁকা না পেয়ে নেমে আসেন। তাদের সবার বাড়িই নীলফামারীর ডোমারে। তারা পেশায় রডমিস্ত্রি।
তাদের মধ্যে রফিকুল বলেন, ‘এত কষ্ট করে চড়নু, বসার জায়গা পাইলাম না।’ উত্তরবঙ্গগামী সবগুলো ট্রেনই ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের ট্রেনযাত্রীরা। তাই উত্তরবঙ্গগামী কোনো ট্রেন আসলে তাতে প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে অনেকের ঈদে বাড়ি ফেরা।
পিডি/এমআরএম/এমএস