ট্রেনযাত্রীদের ভোগান্তি চরমে : স্টেশনেই ঘুম
বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের রেললাইনগুলোর উপরে রয়েছে একটি ওভারব্রিজ। এটি দুই প্লাটফর্মে যাতায়াত করতে ব্যবহার হয়। খাড়াখাড়ি রোদ পড়ায় ওভারব্রিজের নিচে ছায়া পড়েছে। প্লাটফর্মে বসার জায়গা না পেয়ে ঈদগামী অনেক যাত্রী সেই ছায়াতলে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে এই চিত্র দেখা যায়। ঈদুল আজহার সামনে রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেন সিডিউলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের। ভোগান্তিরও শেষ নেই তাদের।
স্টেশনটি ঘুরে দেখা যায়, স্টেশনে কোথাও কোনো বসার জায়গা ফাঁকা নেই। ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের কেউ কেউ দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে নারী, পুরুষ, শিশু-সবাই প্লাটফর্মের মেঝেতে বসে পড়েছেন। ট্রেনের কোনো দেখা নেই দেখে কেউ কেউ প্লাটফর্মেই ঘুমাচ্ছেন। অনেকে ছোট শিশুদের প্লাটফর্মেই খাওয়া-দাওয়া করাচ্ছেন।
নীলসাগর এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ও লালমনি ঈদ স্পেশাল- এই তিনটি ট্রেনের একটিতে করে নওগাঁ জেলার আত্রাইয়ে যাবেন আনাম, মো. ইয়াসিন, মো. আপেল ও তাদের আরও তিনজন সঙ্গী। ঢাকা শহরে রিকশা চালান তারা। ঈদে বাড়ি যেতে তারা শনিবার সকাল ৮টায় বিমানবন্দর স্টেশনে আসেন। সকাল থেকে ট্রেনের দেখা নেই, অন্যদিকে ফাঁকা বসার জায়গাও নেই। উপায়ন্তর না দেখে ক্লান্তি মেটাতে স্টেশনের প্লাটফর্মের মেঝেতেই বসে পড়েছেন তারা।
বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের শনিবার সকালের তথ্য অনুযায়ী, নীলসাগর এক্সপ্রেস শনিবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে আসার কথা, কিন্তু ট্রেনটি ঢাকায় আসবে বিকেল ৪টার পর। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে আসার কথা থাকলেও কখন আসবে তা বলতে পারছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। লালমনি ঈদ স্পেশালও সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে আসার কথা থাকলেও ট্রেনটি পৌঁছায়নি।
এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে রিকশাচালক আঞ্চলিকতার সুরে মো. আনাম বলছেন, ‘বইসা থাকা লাগবে। তাছাড়া তো বুদ্ধি নাই। বিকাল ৪টার পরে পাওয়া গেলেও তো ভোর রাইতে, নইলে পরের দিন সকালে বাড়ি যাওয়া যাইব। বাসে গেলে জ্যামে বসি থাকা লাগবি। কওন যায় না, ৩ দিনও লাগবার পারে।’
দিনাজপুর যাবেন মধ্যবয়সী সেন্টু ও নরেশ। ভোর ৬টায় তারা স্টেশনে এসেছেন। বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তারা ট্রেনের দেখা পাননি।
পিডি/এমআরএম/এমকেএইচ