ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চট্টগ্রামে জমজমাট কোরবানির পশুর হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ০৪:৪৫ পিএম, ০৯ আগস্ট ২০১৯

জমছে না জমছে না করে হঠাৎ চট্টগ্রামের কোরবানির পশুর হাট জমে পুরো ক্ষীর! ছুটির দিন শুক্রবার জমজমাট বিকিকিনি নগরীর ৯টি পশুরহাটই। জমেছে জেলার বাজারগুলোও। পুরোদমে চলছে বেচাকেনা। বৃষ্টিতে কাদা-পানি উপেক্ষা করেই পশুর হাটে ভিড় করছেন ক্রেতারা। অনেকে ইতোমধ্যেই কিনে নিয়ে গেছেন পছন্দের গরু-ছাগল।

নগরীর বিবিরহাট পশুর হাটে শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে পশুর কোনো কমতি নেই। চাহিদা মোতাবেক পশু রয়েছে হাটে। তবে দাম এখনও চড়া বলে জানান ক্রেতারা। ৬০-৭০ হাজার টাকার কমে কোনো গরু পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে অনেকে অপেক্ষা করে আছেন দাম কমার।

এবার বাইরের জেলা থেকে চট্টগ্রামে প্রায় দেড় লাখ পশু এসেছে। ফলে পশুর কোনো ধরনের ঘাটতি নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

kurbai

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে এবার মোট ৯টি পশুর হাট বসেছে। এর মধ্যে দুটি স্থায়ী ও সাতটি অস্থায়ী। স্থায়ী পশুর হাট হচ্ছে সাগরিকা ও বিবিরহাট। আর অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে নূর মোহাম্মদ হাউজিং, সল্টগোলা রেলক্রসিং হাট, কর্ণফুলী হাট, পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন উচ্চবিদ্যালয় মাঠ, পোস্তারপাড় উচ্চবিদ্যালয় মাঠ, স্টিলমিল হাট ও কমল মহাজন হাট।

নগরীর বৃহত্তম দুটি পশুর হাট হচ্ছে সাগরিকা ও বিবিরহাট। চাহিদার অর্ধেকই বিকিকিনি হয় এ দুই হাটে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বেশির ভাগ গরু এ দুটি হাটেই তোলা হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, এবার যশোর, কুষ্টিয়া, রংপুর, পঞ্চগড়, নওগাঁ, রাজশাহী থেকে অসংখ্য গরু-ছাগল আনা হয়েছে। আজও ট্রাকভর্তি গরু এসেছে। বাজারের মুখে নামানোর পর সেগুলো হাটে ঢুকানো হচ্ছে।

kurbai

কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কখনও ভারী আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও ক্রেতারা বাজারে ঘুরছেন। একটির পর একটি গরু দেখছেন। পছন্দ করছেন, কেউ কিনছেন আর কেউ না কিনে ফিরে যাচ্ছেন।

সাগরিকা হাটে দেখা যায়, ভেতরে কোনো ধরনের জায়গা নেই। হাটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গবাদি পশুতে ঠাসা। প্রবেশ মুখেও রাখা হয়েছে গরু-ছাগল। বাজারের ভেতরে সড়কের দু’পাশে সারি সারি গরু দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। সড়কের উত্তর ও দক্ষিণে খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে শত শত গরু। পাশাপাশি রয়েছে অসংখ্য ছাগল। কিছুসংখ্যক মহিষও দেখা গেছে।

গত দু’দিনের তুলনায় হাটে ক্রেতাদের ভিড়ও কয়েকগুণ বেশি দেখা গেছে। বেচাকেনাও বেশ জমজমাট।

তানভীর নামে এক ব্যবসায়ী জানান, তিনি ৫০টি গরু এনেছেন। বৃহস্পতিবার সাতটি বিক্রি করেছেন। বাকিগুলো আজকালের মধ্যে বিক্রি হবে বলে তার আশা।

তিনি বলেন, ‘দাম ধরে রেখে কোনো লাভ নেই। তাই অল্প লাভেই ছেড়ে দিচ্ছি। শেষে কী হয় বলা যায় না।’

Cowhat-ctg-1

মোখতার নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, তিনি ১০টি গরু বিক্রি করেছেন। দামও মোটামুটি পেয়েছেন। শুক্রবার হিসেবে আজ বেচাকেনা কয়েকগুণ বেড়েছে।

নগরের বাকি পশুর হাটগুলোতেও একই চিত্র। দূর দূরান্ত থেকে আসা পশুবাহী ট্রাক রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে গরু নামানো হচ্ছে। দ্রুত নামিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এখানেও দেখা গেছে গরু ভর্তি বাজার। পুরো হাট কানায় কানায় পূর্ণ। একদিকে ছাগল রাখা হয়েছে। বাকি অংশে রয়েছে গরু। সকাল থেকেই ক্রেতারা দরদাম করার পাশাপাশি কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন। এক ঘণ্টা অবস্থানকালে ১০ থেকে ১৫টি গরু বিকিকিনি হতে দেখা গেছে।

কুষ্টিয়া থকে আসা ব্যবসায়ী চাঁন মিয়া জানান, তিনি এবার ২৮টি গরু এনেছেন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার চারটি গরু বিক্রি হয়েছে। দাম খুব বেশি না হলেও ঠকেননি। আজকালের মধ্যে বাকিগুলো বিক্রি হবে-এমন প্রত্যাশা তার।

বিক্রেতারা জানান, এখন পর্যন্ত মাঝারি গরুর চাহিদাই বেশি। বড় গরুর দরদাম হলেও বিক্রি হচ্ছে কম। যা বিকিকিনি হয়েছে তার বেশিরভাগই মাঝারি। কয়েকটা ছোট। ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা দামের গরুর বিকিকিনি চলছে বেশি।

Cowhat-ctg-1

চট্টগ্রাম গবাদি পশু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. শফিকুর রহমান জানান, এবার চট্টগ্রামে চাহিদা মোতাবেক গর-ছাগল রয়েছে। কোন ধরনের ঘাটতি নেই। দামও খুব একটা বেশি নয়।

তিনি বলেন, হাটে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। ক্রেতারাও আসছেন। আজ শুক্রবার বেচাবিক্রি আরও বেশি হচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক জাগো নিউজকে জানান, এবার চট্টগ্রাম জেলায় ৬৩টি স্থায়ী এবং ১৪৬টি অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে। চট্টগ্রামে সম্ভাব্য কোরবানির পশুর সংখ্যা ৭ লাখ ২০ হাজার। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ৭ হাজার ৫৭টি খামারে ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯টি পশু রয়েছে।

গত ৩১ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৩৮৭টি গরু, ৪২ হাজার ২৮৪টি মহিষ, ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৪৮টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ২ লাখের বেশি পশু চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। এবার চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর ঘাটতি নেই।

আবু আজাদ/এনডিএস/পিআর

আরও পড়ুন