রিকশা ছেড়ে কোরবানির গরু সাজাচ্ছেন ইলিয়াস
সংসারের ঘানি টানতে বছর তিনেক আগে রাজধানীতে আসেন বরিশালের মো. ইলিয়াস খান। পেশা হিসেবে বেছে নেন রিকশা চালানো। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে মালিকের জমা বাদ দিয়ে প্রতিদিন তার আয় গড়ে ৮০০-১০০০ টাকা।
ঈদের আগে বাড়তি আয়ের আশায় রিকশা ছেড়ে কোরবানির হাটে গরু সাজানোর সামগ্রী বিক্রির কাজে লেগে পড়েছেন তিনি। বিক্রি করছেন গরুর গলার ঘুগরা (ঘণ্টা), মালা, শিংয়ের ফিতা, মাথার টুপি, গরু বাঁধার দড়ি।
জাগো নিউজের সঙ্গে ইলিয়াস খানের কথা হয় আফতাব নগর অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটে। তিনি বলেন, বাড়িতে বাবা-মা ও পরিবার রয়েছে। সবাই আমরা ওপর নির্ভরশীল। ঢাকায় রিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই নিজের ও পরিবারের খরচ মেটাই। প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকার মতো আয় হয়।
ইলিয়াসের বলেন, রিকশা চালানো অনেক কঠিন কাজ। পরিশ্রমের তুলনায় আয় কম। সুযোগ মেলেনি পড়ালেখার। তাই সেরকম কোনো চাকরিও মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা চালানোকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
কোরবানির হাটে গরু সাজানোর সামগ্রী বিক্রি করতে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার পরিচিত একজনের মাধ্যমে গত বছর আফতাব নগরের এই হাটে গরু সাজানোর সামগ্রী বিক্রি করতে আসি। মূলত তিন দিন ভালো বিক্রি হয়। এতে দিনে গড়ে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা আয় হয়।
ইলিয়াস বলেন, গত বছর ভালো আয় হয়েছিল। তাই এ বছর আবার এসেছি। তবে এখনও গরু বিক্রি জমে উঠেনি। শুক্রবার বিকেল থেকে গরু বিক্রি জমজমাট হবে বলে আশা করছি। গরু বিক্রি বাড়লে আমাদেরও ভালো আয় হবে।
তিনি বলেন, আমি গরু সাজানোর সেটসহ বিক্রি করছি। আবার কেউ চাইলে ১ পিস করেও কিনতে পারেন। গলার ঘুগরসহ সেট নিলে পড়বে দেড়’শ টাকা। আর ঘুগরা ছাড়া ফিতার সেট নিলে ১২০ টাকা পড়বে। আর একটা একটা করে নিলে গলার জরি মালা ২০ টাকা, শিংয়ের জরি ফিতা ২০ টাকা, মাথার টুপি ১০ টাকা, ঘলার ঘুগরাসহ ফিতা ১০০ টাকা, ঘুগরা বিহীন ফিতা ৮০ টাকা পিস বিক্রি করছি। এছাড়া গরু বাঁধার দড়ি আছে ৩০ টাকা দামের।
ইলিয়াস বলেন, একদিন রিকশা চালিয়ে হাজার টাকার ওপর আয় করা যায় না। পরিশ্রমও হয় অনেক বেশি। কিন্তু কোরবানির হাটে গরু সাজানোর সামগ্রী বিক্রি করে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা আয় হয়। আবার রিলাক্সেও থাকা যায়। এ জন্য রিকশা ছেড়ে এখানে এসেছি। কিন্তু বাড়তি আয় করে ঈদের দিন গ্রামের বাড়িতে যাব।
এমএএস/এমএসএইচ/এমকেএইচ