‘কালা-ধলা মানিকরে সন্তানের চেয়ে বেশি যত্ম কইরা পালছি’
রাজধানীর আজিমপুরের অদূরে পলাশী ফায়ার বিগ্রেড অফিসের সামনের রাস্তায় আজ (শুক্রবার) বেলা আনুমানিক ১১টায় বেশকিছু মানুষের জটলা চোখে পড়ে লালবাগ থানা পুলিশের একটি টহল দলের। এ দেখে কোনো ঝামেলা হয়েছে মনে করে গাড়ি নিয়ে দলটি সেদিকে এগিয়ে যায়।
দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে দুজন কনস্টেবল দেখেন, হৃষ্টপুষ্ট দুটি ছাগলকে ঘিরে এ জটলা। সাদা ও কালো রঙের ছাগল দুটি দেখছিল কয়েকজন শিশু। তাদের একজনতো ছাগল দুটিকে চুমো দিয়ে আদর করতে থাকে। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর ছাগল বেপারীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, দুইটা ছাগলইতো দেখার মতো। হাটে নিয়ে যান। এখানে রাস্তায় থাকতে দেয়া হবে না।
এ সময় বেপারি বলেন, ‘স্যার, বেয়াদবি নিবেন না। আমার কালা আর ধলা দুই মানিককে হাটে নেয়া যাইব না। ওরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ছাড়া কাদা-পানির পরিবেশে অভ্যস্ত নয়। এই দুইটারে নিজের সন্তানের চেয়ে বেশি আদর দিয়া পালছি।’
তার কথা শুনে ইন্সপেক্টর মুচকি হেসে বললেন, যা শুনাইলি বেটা, তা দাম কতো তোর কালা আর ধলা মানিকের?
জবাবে ছাগল বেপারী বলেন, ‘স্যার, চাইতাছি তো দেড় লাখ। তয় লাখের নিচের দামে ছাড়ুম না।’
গোপালগঞ্জের মুকসেদপুর থানার বনগ্রামের দরিদ্র কৃষক জাহিদ মিয়া জানান, তিন বছর আগে তিনি নর্থ বেঙ্গল থেকে ‘তোতাপুড়ি’ প্রজাতির এ ছাগল দুটোকে কিনে আনেন। তখন এদের বয়স ছিল মাত্র চার মাস। তিন বছর অনেক যত্ন করে লালন-পালন করেন। নিজের সন্তানের প্রতিও যতটা যত্নবান ছিলেন তার চাইতে বেশি যত্ন নিয়েছেন।
ছাগল দুটি দেখতে আবাল বৃদ্ধ বনিতা জমে যায়। অনেকেই বলাবলি করতে থাকেন, ছাগল দুটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি হৃষ্টপুষ্ট। টাকা পয়সাওয়ালা কোনো খরিদ্দার দেখলে বেশি দাম দিয়ে হলেও পছন্দ করে ছাগল দুটি নিয়ে যাবেন। ছাগল দুটি দেখে সবারই পছন্দ হয়, কিন্তু কেউ ৫০ হাজার টাকার ওপরে দাম বলেননি।
জাহিদ মিয়া বলেন, ছাগল দুটি লাখ টাকার নিচে ছাড়বেন না। প্রয়োজনে বাড়ি ফেরত নিয়ে যাবেন।
এমইউ/এমএসএইচ/এমএস