বৃষ্টির সঙ্গে ট্রেনের বিলম্ব, সীমাহীন ভোগান্তি ঘরমুখোদের
ঈদ উদযাপনে গত ৩০ জুলাই যারা দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছিলেন তারা আজ দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রেনে করে ঢাকা ছাড়ছেন। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই কমলাপুর স্টেশনে উপস্থিত হন যাত্রীরা।
সকালে কমলাপুর স্টেশনে এসে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে চাওয়া যাত্রীরা। গতকাল ট্রেনের কিছুটা বিলম্ব হয়েছিল। তবে আজ ব্যাপক বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন।
অন্য ট্রেনগুলোরও বিলম্ব হবে বলে স্টেশন থেকে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোর প্রতিটিই বিলম্বে ছেড়ে যাবে বলে স্টেশনে রাখা স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে।
একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে ট্রেনের বিলম্ব। ফলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও কমলাপুর ছেড়ে যায় প্রায় দুই ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে। চিলাহাটীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮ টায় ছাড়ার কথা থাকলেও স্টেশনে রাখা স্ক্রিনে সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় ১০ টা ২৫ মিনিট। বেলা ১১টায় এ ট্রেন ছাড়েনি। এ ছাড়া সকাল ৯ টার রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য সময় দেয়া হয় সাড়ে ১০টায়, তবে বেলা ১১টা পর্যন্তও ছাড়েনি। দিনাজপুর-পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস সকাল ১০ টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
চিলাহাটীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন, আজকের টিকিট সংগ্রহের জন্য গত ৩০ জুলাই ১৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অনেকটা যুদ্ধ করে আজকের কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেয়েছিলাম, কিন্তু আজ সময়মতো স্টেশনে উপস্থিত হয়ে জানতে পারলাম ট্রেন আড়াই ঘণ্টা লেট। সঙ্গে মা, স্ত্রী, ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। একে দীর্ঘপথ আমাদের যাত্রা করতে হবে, অন্যদিকে যদি ট্রেন এত লেট হয়, তাহলে এই বিড়ম্বনা কীভাবে মেনে নেয়া যায়। রেল কর্তৃপক্ষ জানেই যে, ঈদের সময় ব্যাপক যাত্রীর চাপ সৃষ্টি হয়। সে অনুযায়ী, তারা আগে থেকে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। আর সেই মাশুল দিতে হয় আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের।
রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী লাবণী আক্তার বলেন, রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে ১০ টাতেও ট্রেনটি আসেনি। আমার মতো হাজার হাজার মানুষ ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছে। স্টেশনে বসে এভাবে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা যাত্রীদের জন্য খুবই বিরক্তকর এবং বিড়ম্বনার। একবার টিকিট সংগ্রহের জন্য ১০-১২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানো, আবার সেই টিকিট অনুযায়ী ঈদযাত্রার সময় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়, এই বিষয়গুলো যে কতটা ভোগান্তির, তা শুধু আমাদের মতো যাত্রীরাই উপলব্ধি করতে পারে।
ঈদযাত্রার সার্বিক বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, আজ ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে সারা দিনে কমলাপুর স্টেশন থেকে ৩টি স্পেশালসহ মোট ৫৫টি ট্রেনে ছেড়ে যাবে। আমরা সার্বিক চেষ্টা করছি, ট্রেনগুলোর শিডিউল ঠিক রাখার। আসলে যে ট্রেনগুলো দেরি করে স্টেশনে এসে পৌঁছেছে, সেই ট্রেনগুলোই দেরিতে ছেড়েছে। বাকি ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়েই স্টেশন ছেড়ে গেছে।
এএস/জেডএ/জেআইএম