পাঁচ স্থানে দুদকের অভিযান
যাত্রীদের নিকট ট্রেনের টিকিট বিক্রি না করে কালোবাজারির মাধ্যমে বিক্রি করে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনা’র উপপরিচালক মো. নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে বুধবার এ অভিযান পরিচালিত হয়।
সরেজমিন অভিযানে দেখা যায়, ওই স্টেশনে সিএনএস (কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম) সার্ভারের মাধ্যমে ভিআইপি টিকিটের কথা বলে ঈদ উপলক্ষে যে বিশেষ কোচ/বগি সংযোজন করা হয়েছে সেগুলোর সিটসমূহও ব্লক করে রাখা হয়েছে। আগামী ১৬ আগস্ট ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসে স্নিগ্ধার ১৪টি, এসি সিট ৮টি এবং শোভন চেয়ারের ১৪০টি সিট অটো ব্লক অবস্থায় দেখতে পায় দুদক টিম।
ভিআইপিগণ সাধারণত শোভন চেয়ার শ্রেণির টিকিট ক্রয় না করলেও ওই ১৪০টি সিট কেন ব্লক করে রাখা হয়েছে তার সদুত্তর স্টেশন কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি। ফলে পরবর্তীতে কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যেই এসব সিট ব্লক করে রাখা হয়েছে দুদক টিমের নিকট এরূপ প্রতীয়মান হয়।
দুদক টিমের উপস্থিতিতে ওই সিটসহ ঈদের সবগুলো ট্রেনের ব্লক করা সিট সাধারণ যাত্রীদের কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে উন্মুক্ত করা হয়। স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী মেহেদী হাসান এমন অপকর্মে জড়িত মর্মে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করে দুদক টিম।
এদিকে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গ্রাহক ভোগান্তি ও হয়রানির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক।
দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট নবায়ন করতে পুরনো পাসপোর্ট সত্যায়িতের ফটোকপি দাখিল করার বিধান/প্রয়োজনীয়তা না থাকলেও দালালের মাধ্যমে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক এ কে এম বজলুর রশীদের নেতৃত্বে বুধবার এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানকালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায় দুদক টিম। গ্রাহক হয়রানি এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সুপারিনটেনডেন্ট মো. বায়েজিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে টিম। অভিযান চলাকালে ওই অফিসের একজন দালালকে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
এদিকে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এবং ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগে ঢাকার রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে অবস্থিত গুলশান ও তেজগাঁও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তারের নেতৃত্বে বুধবার এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে ভূমি রেজিস্ট্রির কিছু পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা পায় দুদক টিম। রিয়েল স্টেট কোম্পানি বা ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিসমূহের জন্য নতুন বিধিমালা প্রণয়ন, ভূমি সেবা সংক্রান্ত অফিসসমূহের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি করা-সহ নানাবিধ সুপারিশ প্রদান করে দুদক টিম।
এছাড়া পরীক্ষার ফি গ্রহণের সময় উন্নয়ন ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়, জমির নামজারি পর্চা সংশোধনীর নামে ঘুষ দাবি ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে যথাক্রমে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, বগুড়া ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ফরিদপুর হতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।
এমইউ/এমএআর/এমএস