কোরবানির পশুকে ভাত দেবেন না
কোরবানির জন্য কেনা পশুকে মানুষের খাদ্যদ্রব্য না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক।
তিনি বলেছেন, 'কোরবানির পশুকে খড়-ঘাস ও পানি ছাড়া বাড়তি কিছু দেয়া উচিত হবে না। অনেকে হাট থেকে গরু কিনে এনে ভালোবেসে ভাত খেতে দেন। এটা ওই গরুর জন্য বিষে পরিণত হয়, এমনটা করলে গরু মারা যাবে; কোনোভাবেই বাঁচানো যাবে না।'
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রমবিষয়ক কর্মশালা ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, কোরবানির পশুকে মানুষে খায় এমন কোনো খাবার দেয়া যাবে না। যেমন ভাত, ভাতের মার, জাবা, লাউ ইত্যাদি। অনেকে গরুকে বাসায় রান্না করা ভাত খাওয়ায়। বলে- আমার বাচ্চার জন্য যে চাল রান্না করেছি, সেই চালের ভাতই গরুকে খাইয়েছি। আসলে আপনি গরুকে ভাত নয়, এসিড খাইয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, গরুকে ভাত খাওয়ালে দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে ওই গরু মারা যাবে। পশুটির সব মাংস নষ্ট হয়ে টক হয়ে যাবে। কোরবানির পশুকে শুধু খড়-ঘাস-পানি খাওয়াবেন।
আরও পড়ুন > ঢাকায় চামড়ার দাম আগেরটায় থাকল
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার চট্টগ্রামে ৬৩টি স্থায়ী এবং ১৪৬টি অস্থায়ী পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাগরিকা বাজারসহ নগরে ৮টি হাট রয়েছে। এসব হাটে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ৭১টি ভেটেরিনারি টিম কাজ করবে। প্রতিটি টিমে ৩-১১ জন সদস্য থাকবেন। এ ছাড়া ক্রেতা ও বিক্রেতাকে সব ধরনের সহায়তা দেবেন।
অপরদিকে নগরের খুলশীতে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (০১৮৫৯ ২৫৫১৫১, ০১৭২০ ৮৮২২৮২) চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে নিরাপদ পশু কিনতে পারে, অসাধু খামারিরা যাতে রোগা, অসুস্থ পশু বিক্রি করে তাদের ঠকাতে না পারে, সেদিকে নজর রাখবে ভেটেরিনারি টিম। এ ছাড়া পশুর ধকলজনিত পানিস্বল্পতা, জ্বর, ব্যথা, পরিবহনকালীন ট্রমাটিক ইনজুরি, সাধারণ ক্ষুধামন্দা ইত্যাদির চিকিৎসা ও পরামর্শ দেবে এ টিম।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এবার চট্টগ্রামে সম্ভাব্য কোরবানির পশুর সংখ্যা ৭ লাখ ২০ হাজার। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ৭ হাজার ৫৭টি খামারে ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯টি পশু রয়েছে। গত ৩১ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৩৮৭টি গরু, ৪২ হাজার ২৮৪টি মহিষ, ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৪৮টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ২ লাখের বেশি পশু চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। তাই এবার চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর ঘাটতি নেই।
ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, বিজ্ঞানসম্মত ও স্বাস্থ্যবান্ধব উপায়ে পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলায় ২০৯ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোয়াক ডাক্তার কর্তৃক অপচিকিৎসা রোধে কার্যক্রম গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন পূর্বকর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাবের সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন, সিভাসুর পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) ডা. একেএম সাইফুদ্দিন, জেলা বিশেষ শাখার ওসি (ওয়াচ) মোহাম্মদ মজিবুর রহমান প্রমুখ।
আবু আজাদ/জেডএ/জেআইএম