হাট তবে কাদা নেই, মানুষের ভিড় নেই
অনেকেই আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততায় যেতে পারেন না পশুর হাটে। অনেকে আবার হাটের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে যেতে চান না। সেসব ক্রেতার জন্য ইতোমধ্যে অনলাইনে অর্থাৎ ভার্চুয়ালে বসেছে পশুর হাট। এ হাটে কাদা নেই। মানুষের ভিড়ও নেই।
চার বছর ধরে শুরু হওয়া এ হাট এ বছর আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কয়েক ক্লিকে পেমেন্ট করে ক্রেতারা নিজের পছন্দ ও বাজেট অনুযায়ী ঘরে বসেই পাচ্ছেন কোরবানির পশু। পেমেন্টও করতে পারবেন অনলাইনে।
আরও পড়ুন > গরুর রশি ধরে টানলেই ব্যবস্থা : এসপি হারুন
অনলাইনে পশুর সবচেয়ে বড় হাট বসেছে বিক্রয় ডটকমে। এখানে বিভিন্ন সাইজের মোট ১০ হাজার গরু রয়েছে। যদিও ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে ৩ হাজার গরু।
প্রতিটি গরুর সঙ্গে বিক্রেতা ফার্মের নাম, গরুর জাত, লাইভ ওজন (হাড়-চামড়াসহ), দাঁতের সংখ্যা, বয়স, টিকা, বুকিংয়ের নিয়ম ইত্যাদি দেয়া রয়েছে।
বিক্রয় ডটকমের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস অফিসার ঈশিতা শারমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর অনলাইনে পশু বেচাকেনার সাড়া অনেক বেশি। গত বছর বিক্রয় ডটকমে ৬ হাজার গরুর বিজ্ঞাপন এলেও এবার সেই সংখ্যা ১০ হাজার। আগেরবার ঈদের দু-তিনদিন আগে গরু বিক্রি হয়েছিল। এবার ঈদের ১০ দিন আগ থেকেই কেনা-বেচা জমজমাট। বিক্রয় ডটকমে ১০০টির মতো সদস্য ফার্ম এসব গরু সরবরাহ করছে।’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল মিট এবার নিজেদের ওয়েবসাইটে মোট ৪৭৯টি গরু বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছে। এগুলোর দাম সর্বনিম্ন ৬৬ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ১৬১ কেজি থেকে প্রায় ১ টন পর্যন্ত গরু আছে তাদের। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তাদের ২৯৩টি গরু বিক্রি হয়েছে।
প্রতিটি গরুর বিক্রির বিজ্ঞাপনের জন্য তারা ওয়েবসাইটে গরুর ৪টি ছবি, একটি ভিডিও, গরুর জাতের নাম, বয়স, ওজন, রঙ, মোটাতাজাকরণের বিবরণ, লিঙ্গ, কী কী খাবার খাওয়ানো হয়েছে, গরুকে কী কী ওষুধ ও টিকা দেয়া হয়েছে- এ বিবরণ রয়েছে।
এ ছাড়া অনলাইনে কেনা গরু বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য আলাদা ডেলিভারি চার্জ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ঈদের দুদিন আগে ঢাকায় গরু পৌঁছে দেয়ার জন্য ৭ হাজার ৫০০ টাকা, তিনদিন আগে ৬ হাজার, চারদিন আগে ৫ হাজার টাকা নিচ্ছে তারা।
অনলাইনে এই দুই সাইট ছাড়াও আমেরিকান ডেইরি, দেশি মিট, দারাজ, প্রিয়শপ, আমার দেশ আমার গ্রামসহ কয়েকটি ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে কোরবানির পশু কেনা-বেচা হচ্ছে।
অনলাইনে গরু বিক্রির প্রচলনটা বাংলাদেশের জন্য কিছুটা নতুন হলেও এখানে ক্রয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন ক্রেতারা।
আরও পড়ুন > গরুকে ইনজেকশন দিলেই হানা দেবেন ম্যাজিস্ট্রেট
আহসানুর রহমান নামের এক ক্রেতা জাগো নিউজকে জানান, বর্তমানে ঢাকার যা অবস্থা, হাটে গিয়ে গরু কেনা, তারপর তাকে বাড়ি আনা, অনেক বড় ঝামেলা। সব মিলে প্রতি বছর ভোগান্তি পোহাতে হয়। এবার অনলাইনে গরু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১০টা গরু দেখে যেটা পছন্দ হবে, সেটা দেখতে যখন খুশি বিক্রেতার কাছে চলে যাবো। পছন্দ হলে টাকা দেব, তারাই পৌঁছে দেবে, কোনো ঝঞ্ঝাট নেই।
এআর/জেডএ/জেআইএম