নাকে-মুখে রক্ত আসছে ডেঙ্গু আক্রান্ত বিজয়ের
জ্বর হওয়ায় এক সপ্তাহ আগে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র বিজয়কে। দুদিন পর ডেঙ্গু ধরা না পড়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু বাড়ি ফেরার পরদিন শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, নাকে-মুখে আসতে থাকে রক্ত। আতঙ্ক নিয়ে আবারও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় বিজয়কে।
বিজয়ের পরিবার বিস্ময় প্রকাশ করে বলছেন, দুদিন থাকলাম হাসপাতালে। তখন কিছুই ধরা পড়ল না। বাসায় ফিরে নাকে-মুখে রক্ত আসায় আজ ভর্তি করা হয়। দুপুরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হাসপাতালের নার্স বলেছে ডেঙ্গু হয়েছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১১নং শিশু ওয়ার্ডের বারান্দায় জায়গা হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩৪০ রোগী ভর্তি হয়েছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। এরমধ্যে ৯৪৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৯৮ জন। সবমিলে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৯৫ জন। এরমধ্যে শুধু ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুই চিকিৎসাধীন ১৫৩।
শিশু ওয়ার্ডের ভেতরে যাওয়ার পথে বারান্দায় বেডে শুয়ে রয়েছে শিশু বিজয়। মুখ রক্তে মাখা। তাকাতেই যে কারও আটকে যাবে চোখ। বিজয়ের চোখ লাল, নাকেও রক্ত।
মা লিপিকে জিজ্ঞাসা করতেই আতকে উঠেন ছেলের দিকে তাকিয়ে। নার্সকে ডেকে বলেন, সিস্টার রক্ত পড়া তো বাড়ছে। আল্লাহ'র দোহাই কিছু করেন।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের নার্স (ইনচার্জ) আনোয়ারা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ডাক্তার চোখের দেখায় বলেছে ডেঙ্গু রোগী। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট আমি দেখিনি। রোগীর দাদা জানালো রিপোর্টে ডেঙ্গু আসছে। প্লাটিলেট কম থাকায় ব্লিডিং হচ্ছে। জরুরি চিকিৎসা চলছে।
মা লিপি বেগম জানান, মিরপুর থানাধীন ৬০ ফিট আমতলা এলাকায় তাদের বাড়ি। গত ৩১ জুলাই এখানেই জ্বরের কারণে ভর্তি করা হয়েছিল বিজয়কে। দুদিন পর স্বাভাবিক জ্বর বলে নরমাল জ্বরের চিকিৎসাপত্র দিয়ে ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্তু গতকাল রাত থেকে চোখে-মুখে রক্ত আসা শুরু হয়।
কেঁদে মা লিপি বলেন, ডেঙ্গু জ্বর বেশি খারাপ হলে নাকি ভেতরে ভেতরে রক্ত ঝড়ে। কিন্তু এভাবে রক্ত বেরিয়ে আসে তা শুনি নি। খুব খারাপ লাগছে।
দাদা মো. মানিক বলেন, ডাক্তার ডেঙ্গু কইলো। আগে তাহলে কি হইছিল? এখন বাচ্চাটার কষ্ট হচ্ছে, রক্ত ঝড়া দেখা বুকটা ধকধক করছে। আল্লাহ'র রহমতে যেন আমার বুকের মানিকটা সুস্থ হয়ে যায়।
জেইউ/জেএইচ/জেআইএম