ডেঙ্গু রোগীতে সয়লাব সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশে আন্তঃবিভাগের প্রবেশ গেট। এ গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে সারি সারি রোগী শুয়ে ফ্লোরে রয়েছেন। এর বামপাশে রয়েছে নামাজ ঘরের প্রবেশ পথ। এর সামনেও রোগীরা গাদাগাদি করে শুয়ে রয়েছেন।
সোজা এগোনোর পর বামদিকে গেলে নারীদের মেডিসিন বিভাগ এবং ডানদিকে গেলে পুরুষদের। বাম ও ডান– দুদিকের বারান্দাতেই শুয়ে রাখা হয়েছে রোগীদের। কারও কারও ভাগ্যে হাসপাতালের দেয়া বিছানা জুটলেও অনেকের ভাগ্যে জোটেনি। যাদের জোটেনি, তারা ফ্লোরেই রয়েছেন।
ডানে পুরুষ ওয়ার্ডের দিকে এগোতে থাকলে আবার দুই দিকে দুটি রাস্তা চলে গেছে। এ দুই রাস্তার দ্বারেও রোগী। এবার ডানদিকে মোড় নিয়ে বামে প্রবেশ করলেই পুরুষদের মেডিসিন ওয়ার্ড। এই রাস্তাটুকুর পাশেও রোগীদের অবস্থান। পুরুষ ওয়ার্ডের ভেতরে জায়গা না পেয়ে অনেকেই ফ্লোরে অবস্থান নিয়েছে। নারী ওয়ার্ডের ভেতরেও একই অবস্থা। বরং তিন থেকে চার দিন আগে নারী ওয়ার্ডে রোগীর যে চাপ ছিল, তার চেয়ে বাড়তি চাপ দেখা গেল রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসব রোগীদের অধিকাংশই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। সম্প্রতি রাজধানীতে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করায় হাসপাতলের বেডে জায়গা না পেয়ে এভাবেই চিকিৎসা নিচ্ছেন ডেঙ্গু রোগীরা।
বাথরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নয়, অন্যদিকে বাথরুম পর্যন্ত যাওয়ার সক্ষমতাও নেই – তাই জ্বরে আক্রান্ত পিয়ালকে বারান্দাতেই বিছানা করে শুয়ে মাথায় পানি দিচ্ছিলেন তার স্বজন। মিরপুরের কাজীপাড়া থেকে আসা ডেঙ্গু আক্রান্ত পিয়াল জানান, বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হই। ভর্তির পর থেকেই বারান্দায় রয়েছি।
পাঁচ থেকে ছয় দিন জ্বরে ভোগার পর শনিবার রাত ৩টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৫ বছর বয়সী রায়হান। মেঝেতে একটি পার্টির উপর শুয়ে রাখা হয়েছে তাকে।
শেওড়াপাড়ার ডেঙ্গু আক্রান্ত রায়হানের ভগ্নিপতি (বোনের স্বামী) রেজাউল বলেন, ‘শনিবার রাত ৩টার দিকে জরুরি বিভাগে আনা হয় রায়হানকে। রোববার দুপুরে তিনি হাসপাতালের বেড পায়নি।’
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়াকে ফোন দেয়া হলেও তিনি তা কেটে দেন।
পিডি/এএইচ/জেআইএম