পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষককে লাথি : সেই নাজিম এখনও অধরা
চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ কেন্দ্রে বিএড ও এমএড পরীক্ষা চলাকালীন নকলে বাধা দেয়ায় কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের গায়ে লাথি দেয়া সেই নাজিম উদ্দিনকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকালের (শনিবার) বিএড-এমএড চূড়ান্ত কোর্সের দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজের শিক্ষকরা।
অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালত অপর্ণাচরণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অস্থায়ী শিক্ষক।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনার পরপরই সহকারী অধ্যাপক ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে নাজিমের বিরুদ্ধে নগরীর সদরঘাট থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগরের সদরঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখনও আমি কলেজ ক্যাম্পাসে আছি। মামলার বাদীসহ আমরা আবারও অভিযানে বের হব। আসামিকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল চট্টগ্রাম সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের বিএড ও এমএড কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছিল সরকারি সিটি কলেজ কেন্দ্রে। এমএড কোর্সের শিক্ষার্থী হিসেবে প্রশাসনিক ভবনের ৫০২ নম্বর কক্ষে পরীক্ষায় অংশ নেন অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। কক্ষে দায়িত্ব পালন করছিলেন সিটি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ইকবাল হোসেন ও একই বিভাগের অতিথি শিক্ষক আরিফ মাহমুদ। তারা নাজিমের উত্তরপত্রের ভেতর থেকে বইয়ের পৃষ্ঠা উদ্ধার করেন। এ সময় নাজিম অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। দুই শিক্ষক তার উত্তরপত্র নিয়ে নেন। একপর্যায়ে নাজিম উত্তরপত্র কেড়ে নিয়ে সেটি ছিঁড়ে ফেলেন এবং হল থেকে বেরিয়ে যান।
সিটি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ও পরীক্ষা কমিটির সদস্য নাছির ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ ঘটনার পর সিটি কলেজ ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ হল পরিদর্শনে আসেন। এর মধ্যে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন তার মোবাইল নেয়ার জন্য হলে ঢোকেন। এ সময় তিনি আবারও গালিগালাজ করতে করতে আরিফ মাহমুদ স্যারের কলার ধরে থাপ্পড় মারতে থাকেন। আরিফ স্যারকে উদ্ধার করতে গেলে ইকবাল হোসেন স্যারকেও লাথি মারে নাজিম। তখন কয়েকজন শিক্ষক এগিয়ে এসে তাকে ধরার চেষ্টা করলেও তিনি দ্রুত বেরিয়ে যান।’
ঘটনার পর গতকাল সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসেন কলেজের শিক্ষকরা। তারা শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা না হলে আগামীকাল শনিবার বিএড ও এমএড চূড়ান্ত কোর্সের দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
মামলার বাদী সহকারী অধ্যাপক মো. ইকবাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শিক্ষকের গায়ে লাথি দেয়া নাজিম উদ্দিন গ্রেফতার হয়নি। অথচ আজ সকালে বিভিন্ন পত্রিকায় দেখলাম সাংবাদিকরা তার বক্তব্য প্রকাশ করেছে। কি এমন হলো যে সাংবাদিকরা একজন আসামির বক্তব্য নিতে পারলেও পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না? আমরা আজ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের সঙ্গেও দেখা করব।’
আবু আজাদ/এনডিএস/এমকেএইচ