মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
কোটা ব্যবস্থা বাতিলের পরও মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রয়েছে বলে যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল তা দূর করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গত বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারির পর বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড (আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি) পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা পদ্ধতি বিদ্যমান নেই।
এ বিষয়টি স্পষ্ট করে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোটা বাতিলের পরিপত্রে বলা হয়, সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চের পরিপত্রের কোটা পদ্ধতি নিম্নোক্তভাবে সংশোধন করেছে- নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। একইসঙ্গে এসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হল।
আগে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ করা আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগের বিধান ছিল।
কিন্তু কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারির পরও মুক্তিযোদ্ধা কোট বহাল রয়েছে বলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল জারি করা স্মারক অনুযায়ী, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ কোটায় (মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, এতিম ও শারিরিক প্রতিবন্ধী এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা সদস্য) কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে অপূর্ণ পদগুলো জেলার প্রাপ্যতা অনুযায়ী স্ব-স্ব জেলার সাধারণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশ জমা দেয়। কমিটি নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা উঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করে। সেই প্রস্তাবটিই বুধবার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ২ জুলাই কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে সরকার।
এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন।
আরএমএম/এমআরএম/জেআইএম