যেকোনো নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বদা নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পাশে ছিলেন। দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। তার স্বপ্ন ছিল দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জাতির পিতার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে, দারিদ্র্যমুক্ত, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং মানবাধিকার ভিত্তিক সোনার বাংলা গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ নির্যাতনবিরোধী কমিটির পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেছেন বলে জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. মো. রেজাউল করিম।
পর্যালোচনা সভায় মন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধি রয়েছেন।
মন্ত্রী সভায় জানান, বাংলাদেশ যেকোনো হিংস্র, নিষ্ঠুর বা অবমাননাকর শাস্তি বা নির্যাতনের ঘটনা রোধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সারাদেশের জেলা প্রশাসকদের প্রতি ৩১ দফা নির্দেশনায় পুনর্বার উল্লেখ করেছেন যে সরকারি সেবা গ্রহণের সময় জনগণ যাতে হয়রানির শিকার না হয়। বিশেষ করে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা মানবতার স্বার্থে আমাদের সীমানা খুলে দিয়েছি এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক তাদের সহিংস নির্যাতনের সময় জোরপূর্বক নির্বাসিত মিয়ানমার নাগরিকদের স্বাগত জানিয়েছি এবং এভাবে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু ও ধ্বংস থেকে বেঁচে গেছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক সত্য হলো বতর্মানে রোহিঙ্গাদের প্রবাহ যদিও কম, তবুও অব্যাহত রয়েছে। আমরা পরিবেশের অবক্ষয় ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ৬০০০ একরও বেশি বনভূমি বরাদ্দ করেছি।
মন্ত্রী বলেন, অসাম্প্রদায়িক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বজায় রাখতে সরকার সংখ্যালঘু ও জাতিগত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা নির্যাতন রোধে কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত, যেকোনো অজুহাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সহিংসতা মোকাবেলায় বাংলাদেশ কঠোর নীতি বজায় রেখেছে। ইউডিএইচআরের নীতি ও বিধানগুলো আমাদের সংবিধানের ২য় অংশ এবং সংবিধানের তৃতীয় অংশগুলোতে বিধৃত হয়েছে। আমাদের সংবিধানের ৩৫.৫ অনুচ্ছেদেও এ বিষয়ে নাগরিকদের সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই কনভেনশনটি কার্যকর করার জন্য ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা অমর্যাদাকর আচরণ অথবা শাস্তির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ সনদের কার্যকারিতা প্রদানের লক্ষ্যে ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নির্ধারণ) আইন’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অত্যাচার ও নিপীড়নের মামলাগুলো সামনে আনতে গঠনমূলক ভূমিকা পালনকারী একটি অত্যন্ত সক্রিয় মিডিয়া পেয়ে বাংলাদেশ গর্বিত। সরকার গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজের গঠনমূলকভাবে তাদের ভূমিকা পালনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
এফএইচ/এনএফ/জেআইএম