কত টিকিট বিক্রি হলো তাও জানা যাচ্ছে অ্যাপ থেকে
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুরু হয়েছে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। মোবাইল অ্যাপ আর অনলাইনেও (ই-সেবা) টিকিট বিক্রি চলছে।
সোমবার সকাল ৬টায় অ্যাপসে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। অ্যাপে দিনে কত টিকিট বিক্রি হচ্ছে, তা মনিটর করে অ্যাপেই জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে আপনি আগেই জেনে নিতে পারবেন আজ কিংবা যেদিন আপনি টিকিট কিনবেন, ওইদিন কতটি টিকিট খালি আছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি জানান, শুরুর সাড়ে চার ঘণ্টায় সাত হাজার ৪৬৩টি টিকিট মোবাইল অ্যাপ আর অনলাইনে (ই-সেবা) বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া কাউন্টার থেকে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৩৭টি টিকিট।
সোমবার রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে এ কথা জানান তিনি। এ সময় রেলের মহাপরিচালক মো.শামসুজ্জামান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়া জাহানসহ রেলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রেলমন্ত্রী জানান, এখন থেকে আন্তঃনগর মেইল সব মিলিয়ে ৫৯ হাজার ৬৭৭ টিকিট একদিনের জন্য যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা হবে।
‘আজকে ১০ হাজার ৭৭৪টি টিকিট মোবাইল অ্যাপ ও ই-সেবার মাধ্যমে বিক্রি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অ্যাপে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৬৭৪ আর ই-সেবার মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৭৮৯টি টিকিট। এ সময়ে টিকিট অবিক্রিত ছিল তিন হাজার ৩৫১টি।’
মন্ত্রী জানান, এবারও রাজধানী ঢাকার পাঁচটি স্থান থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে রাজশাহী খুলনা ও রংপুর বিভাগের টিকিট কমলাপুর থেকে দেয়া হচ্ছে। বিমানবন্দর থেকে দেয়া হচ্ছে নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের টিকিট। তেজগাঁও থেকে দেয়া হচ্ছে ময়মনসিংহ জামালপুরগামী ট্রেনের টিকিট। বনানী থেকে দেয়া হচ্ছে নেত্রকোনাগামী ট্রেনের টিকিট এবং পুরাতন ফুলবাড়িয়া স্টেশন থেকে দেয়া হচ্ছে সিলেট ও কিশোরগঞ্জের টিকিট।
মন্ত্রী জানান, গতবার এলোমেলো ছিল। এবার পরিবেশ দেখে উন্নতি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বাকিটা আপনাদের বিবেচনা।
তিনি বলেন, আগামী ১২ আগস্ট সম্ভব্য ঈদুল আজহার তারিখ ধরে আমরা ট্রেনের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এখানে র্যাব পুলিশ ও রেলওয়ে নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীসহ সবাই এক সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
গতবারের মতো এবারও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের টিকিট পাচ্ছে না যাত্রীদের এমন অভিযোগের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ৫ লাখ লোক যদি একসঙ্গে টিকিটের জন্য অ্যাপসে হিট করে, তাহলে টিকিট দেয়া সম্ভব নয়। কারণ আমরা অ্যাপের টিকিট দিচ্ছি ১০ হাজার (দিনে)। এর মানে আমি চার লাখ ৯০ হাজার লোককে টিকিট দিতে পারছি না। কাজেই তাদের ভয়েস বেশি হবে।
‘একই সঙ্গে আমরা কাউন্টারের যদি টিকিট বিক্রি করি ১০ হাজার, আর লাইন ধরে যদি এক লাখ, তাহলে ৯০ হাজার লোককে টিকিট না নিয়ে ফিরে যেতে হবে। আমাদের সাধ্যের মধ্যে যা আছে আমরা তাই দিচ্ছি’, বলেন মন্ত্রী।
রেলকর্মীরা সিন্ডিকেট করে টিকিট দিচ্ছে এমন অভিযোগের উত্তরে মন্ত্রী বলেন এটা আইডেন্টিফাই করা কঠিন। একাধিকবার টিকিট নেয়ার সুযোগ কম। কারণ, প্রতিটা টিকিট বিক্রির সময় তথ্য রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে। আর ছোটোখাটো কোনো অনিয়ম যাতে না হয়, এ বিষয়ে আমরা সচেষ্ট আছি।
ডাবল লাইন না হওয়া পর্যন্ত শিডিউল বিপর্যয় থাকবে
রেলের শিডিউল বিপর্যয় প্রসঙ্গে রেমন্ত্রী বলেন, এখন এক লাইন দিয়ে ট্রেন চলছে। যতদিন এক লাইন দিয়ে ট্রেন যাবে, আর আরেক লাইন দিয়ে ট্রেন আসবে, এমন ব্যবস্থা না হবে অর্থাৎ ডাবল লাইন না হওয়া পর্যন্ত শিডিউল বিপর্যয় বন্ধ করা যাবে না।
পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে কমলাপুর স্টেশনে সোমবার প্রথম দিন বিক্রি হচ্ছে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট।
দেখা গেছে, নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার আসায় টিকিট ক্রয়ে রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছেন হাজারো মানুষ। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়েছে কেউ আগের দিন আবার কেউ ভোর থেকে প্রত্যাশীত টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামীকাল বিক্রি হবে ৮ আগস্টের টিকিট, ৩১ জুলাই ৯ আগস্টের, ১ আগস্ট ১০ আগস্টের এবং ২ আগস্ট ১১ আগস্টের অগ্রিম টিকিট দেয়া হবে।
রাজধানীর পাঁচ স্থানে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করা হবে। আর মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু হবে সকাল ৬টা থেকে।
এসআই/জেডএ/পিআর