ডেঙ্গু টেস্টের ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ
ডেঙ্গু টেস্টের ফি ৫০০ টাকার বেশি না নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল অফিসার (হাসপাতাল) ডা. শাহ আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ডেঙ্গু Ns1 পরীক্ষা সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার পূর্ব মূল্য ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ মোকাবিলায় প্রাইভেট হাসপাতাল/ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর পরিচালক/ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ‘ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা’ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন > অতীতের সব রেকর্ড ভাঙল ডেঙ্গু
রোববার (২৮ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ডেঙ্গু টেস্টের ফি নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল অফিসার (হাসপাতাল) ডা. শাহ আলম সিদ্দিকী।
সিদ্ধান্তগুলো হলো
১. ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের জন্য টেস্টগুলোর মূল্য নিম্নরূপ হবে : ক. NS1- ৫০০ টাকা (সর্বোচ্চ), যার পূর্ব মূল্য ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
খ. IgM + IgE অথবা IgM/ IgE- ৫০০ টাকা (সর্বোচ্চ), যার পূর্ব মূল্য ছিল ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা।
গ. CBC (RBC + WBC + Platelet + Hematocrit)- ৪০০ টাকা (সর্বোচ্চ), যার পূর্ব মূল্য ছিল ১ হাজার টাকা।
এই মূল্য তালিকা রোববার (২৮ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই মূল্য তালিকা কার্যকর থাকবে।
২. সব প্রাইভেট হাসপাতাল/ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য একটি ‘ওয়ান স্টপ সেন্টার’ চালু করবে।
৩. সব হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে।
৪. ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যার অনুপাতে ডাক্তার, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করা হবে।
বছর শেষ হতে এখন পাঁচ মাস বাকি থাকলেও চলতি মাসেই বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় দেড় যুগ আগে ২০০২ সালে দেশে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ২৩২ জন আক্রান্ত হন। তবে ২০০০ সালে ৯৩ জনের মৃত্যুর রেকর্ডই ছিল সর্বাধিক। দীর্ঘ ১৬ বছর পর অর্থাৎ ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ১৪৮ জন আক্রান্ত হয়ে নতুন রেকর্ড করেছিল। মৃতের সংখ্যা ছিল ২৬।
চলতি বছরের সাত মাস শেষ হওয়ার আগেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৫২৮। ফলে ২০১৮ সালের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড স্থাপিত হলো।
আরও পড়ুন > এবার ডেঙ্গু কেড়ে নিল ছোট্ট জারিফার প্রাণ
শুধু তাই নয়, গত বছরের জুলাইয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৫ হাজার ৫০ জন। এ বছর জানুয়ারিতে ৩৭, ফেব্রুয়ারিতে ১৯, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৮৪, জুনে ১ হাজার ৮২৯ ও জুলাইয়ে (২৭ জুলাই পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৮ হাজার ৩৮৪।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেল্থ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৫২৮ ডেঙ্গু রোগী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছেন। তবে এ বছর মৃতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, মাত্র আটজন।
এমইউ/এমএআর/জেআইএম