টিকিটযুদ্ধে বৃষ্টির বাগড়া
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল সাড়ে ৬টায়। কল্যাণপুর, শ্যামলী, গাবতলী, আসাদগেটের বাস কাউন্টারগুলোয় মিলছে অগ্রিম টিকিট। সকাল থেকেই থেমে থেমে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাস কাউন্টারগুলোয় ভোর থেকে ভিড় করছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কল্যাণপুর, শ্যামলী, গাবতলীর বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টিকিটপ্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড়। সময় গড়াতে গড়াতে বৃষ্টি বাড়লেও কমেনি টিকিটপ্রত্যাশীদের সংখ্যা। বরং বেড়েছে, দীর্ঘ হয়েছে কাউন্টারের সামনের লাইন।
কল্যাণপুরে শ্যামলী বাসের কাউন্টারে কথা হয় জয়পুরহাটের টিকিটপ্রত্যাশী সানারুল ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, শ্যামলীতে সুবিধা হচ্ছে, অঞ্চল ভাগ করে চারটি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করছে। তবুও চাপ কম নয়। কল্যাণপুর কাউন্টারে সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর দীর্ঘলাইন পেরিয়ে কাঙ্ক্ষিত টিকিট হাতে মিলেছে। ৮ আগস্টের চারটি টিকিট পেয়েছি। সপরিবারে বাড়ি যাচ্ছি এবার।
একই কাউন্টারে তারিকুল ইসলাম নামে আরেক টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে লাইনে, দু’বার বৃষ্টিতেও ভিজেছি। রংপুরের দুটি টিকিট দরকার ১০ তারিখের। প্রচণ্ড যাত্রীর চাপ। জানি না, এই অপেক্ষা আর কষ্টের পর কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাব কি না।
শ্যামলী বাসের কল্যাণপুর কাউন্টারের ম্যানেজার আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের টিকিট বিক্রিতে ঝামেলা নেই। আসাদগেট, শ্যামলী, কল্যাণপুর ও টেকনিক্যাল মোহনা পাম্প কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে অঞ্চলভেদে। প্রথম দিন হিসেবে চাপ আজ একটু বেশিই। সব রুটের পর্যাপ্ত টিকিট রয়েছে।
শ্যামলী এনআর, ডিপজল বাস কাউন্টারেও এমন অবস্থা দেখা যায়।
ডিপজল কাউন্টারে সবুজ নামে টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, এখানে দীর্ঘলাইন। কিন্তু সব রুটের ঈদের টিকিট বিক্রি করছেন মাত্র একজন। যে কারণে অপেক্ষা বেশিই। তাই শঙ্কা অপেক্ষার শেষে টিকিট পাব কি না।
ডিপজল কাউন্টারের ম্যানেজার সৈয়দ মো. ইসলাম বলেন, এবার আমাদের ঈদযাত্রার গাড়ির সংখ্যা কম, জনবলও কম। তাই মাত্র একজনে টিকিট বিক্রি করতে হচ্ছে।
গাবতলীতে অরিন, এসআর, আল হামরা, হানিফ ও হক কাউন্টারেও দেখা যায়, টিকিটপ্রত্যাশীদের দীর্ঘলাইন।
হানিফ পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মোশারফ হোসেন বলেন, সকাল থেকেই যারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তাদের সবার টিকিটের ব্যবস্থা হবে, আশা করি। এক যাত্রী একাধিক টিকিট কিনছেন। দুপুরের পর বলা যাবে, টিকিটের কী অবস্থা।
পাশাপাশি আল হামরা ও এসআর কাউন্টারের সামনে দীর্ঘলাইন। সকাল সাড়ে ১০টায় দেখা যায়, বৃষ্টি পড়ছে। অধিকাংশ যাত্রীই হাতে ছাতা ধরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে টিকিটের অপেক্ষায়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করে পরিবহন কোম্পানিগুলো।
আগামী ১১ বা ১২ আগস্ট সম্ভাব্য ঈদ ধরে অগ্রিম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে সম্প্রতি বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক হয়। বৈঠকে আজ (২৬ জুলাই, শুক্রবার) সকাল থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
খুলনা, বরিশালসহ উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলগামী বাসের অগ্রিম টিকিট গাবতলী এবং কল্যাণপুরের কাউন্টার থেকে পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইনেও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।
রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, ‘বরাবরের মতো এবারও সরকার নির্ধারিত দামেই টিকিট বিক্রি হবে। এবারও টিকিট বিক্রি মনিটরিং করা হবে। কেউ যেন নির্ধারিত ভাড়ার বেশি নিতে না পারে, সেজন্য দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়ার চার্ট টাঙিয়ে দিতে বলা হয়েছে বাস কোম্পানিগুলোকে। কেউ যদি নির্ধারিত ভাড়ার বেশি ভাড়া নেন, প্রমাণ সাপেক্ষে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জেইউ/জেডএ/এমএস