মন্ত্রীর আশ্বাসের অপেক্ষায় প্রাথমিকের শিক্ষকরা
টানা ৩৯ দিন ধরে জাতীয়করণ থেকে বাদপড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন রাজপথে এসে দাবি পূরণে আশ্বাস দিলে আন্দোলন ছেড়ে শিক্ষকরা বাড়ি ফিরবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তার পাশে ফুটপাতে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।
রাজপথে গত ৩৯ দিন আন্দোলনেও দাবি পূরণ হয়নি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। তার ওপর গত ২৩ দিন ধরে চলছে আমরণ অনশন। আন্দোলনে ২৫৮ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন শিক্ষক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেন বলে জানান সমিতির নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মো. কামাল হোসেন বলেন, গত এক মাসের অধিক সময় ধরে রাস্তার ওপর বসে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। দাবি পূরণে সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে আমাদের কয়েকজন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সাক্ষাৎ করেছেন। আমাদের দাবির সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। আমাদের আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফেরারও আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মো. কামাল হোসেন বলেন, এ বিষয়টিই আন্দোলনরত শিক্ষকদের মাঝে এসে বলার আহ্বান জানাই আমরা। তাতে মন্ত্রী মহোদয় সম্মতি জানিয়েছেন। বর্তমানে তিনি নিজ জেলা কুড়িগ্রামে রয়েছেন। ঢাকায় ফিরে আমাদের মাঝে এসে দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেবেন বলেও জানান।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বাদপড়া সারাদেশের প্রায় চার হাজার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৩০০টির মতো প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য যাচাই-বাছাই করা হলেও তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলা থেকে এ আন্দোলনে বেশ কিছু নারী শিক্ষক যোগ দিয়েছেন। তাদের অনেকে নিজের শিশুসন্তানকে নিয়ে ফুটপাতে বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তীব্র গরম আর ধুলাবালির মধ্যে খালি গায়ে শিশুদের শুইয়ে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো শিশু তীব্র গরম সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে কাঁদছিল।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, জাতীয়করণের দাবিতে আমরা গত এক মাসের বেশি সময় রাস্তায় বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় দিন-রাত কাটছে। বৃষ্টি এলে ভিজে যাচ্ছি, সেই ভেজা কাপড়েই থাকতে হচ্ছে, তার ওপর ডেঙ্গুর উপদ্রব। এতে আমাদের অনেকে গুরুত্ব অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শুয়ে আছেন। একজন প্রাণ হারিয়েছেন। আর কত প্রাণ গেলে সরকার আমাদের সামাজিক মর্যাদার স্বীকৃতি দেবে?
এমএইচএম/বিএ