সোহরাওয়ার্দীতে ২৩ শিশুসহ ১১২ ডেঙ্গু রোগী
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত পাঁচদিন ধরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাজবাড়ীর নাসির দেওয়ান (২৭)। তিনি রাজবাড়ী সরকারি কলেজে স্নাতকোত্তরের ছাত্র। তার সঙ্গে ছোট ভাই এনামুলসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য রয়েছেন।
শুরু নাসির নয় তার মতো এমন শতাধিক ব্যক্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বেডে ও মেঝেতে শুয়ে আর্তনাদ করছেন। ২৩ জন শিশুসহ হাসপাতালের সাতটি ওয়ার্ডে ১১২ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নাসির দেওয়ান জানান, গত ১৫ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হন, এরপর ফরিদপুর সরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা গত ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বর্তমানে কিছুটা সুস্থতাবোধ করছেন।
পাশের বেডে চিকিৎসাধীন মো. আল আমীন নামে আরেক ডেঙ্গু রোগী। তিনি ঢাকার পান্থপথে থাকেন। হাসপাতালে সঙ্গে তার মা বিলকিস বেগম রয়েছেন।
আল আমীন বলেন, ৭ দিন আগে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখানে ভর্তি হওয়ার আগে একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করতে দেন। সেসব টেস্টের রিপোর্টে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি হয়।
হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছেন ফরিদপুরের মিজান (৫০)। ডেঙ্গু রোগে আক্তান্ত হয়ে পাঁচদিন ধরে এ হাসপাতালে ভর্তি। ওয়ার্ডে সিট না পেয়ে মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছেন। সঙ্গে তার স্ত্রী ইসমত আরা রয়েছেন।
মিজান বলেন, জ্বর আসার পর মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। স্থানীয় চিকিৎসক দেখালে কিছু টেস্ট করতে দেয়। টেস্টে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। চিকিৎসকের পরামর্শে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়। তবে হাসপাতালের মেঝেতে আশ্রয় নিলেও নিয়মিত ডাক্তার এসে দেখছেন। চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জারিন ও ডা. বিল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, আগে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ হিসেবে জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হতো। এবার এ উপসর্গগুলোর পাশাপাশি বমি, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া দেখা যাচ্ছে।
চিকিৎসকরা আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তির তিনদিন পর রোগীদের শরীরে জ্বর চলে যায়, তবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা সংকটপূর্ণ সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ সময়ে অনেকের রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। সেসব রোগীদের আমরা নিবিড় পরিচর্যায় রাখি। বেশি পরিমাণে পানিসহ তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে সঠিক চিকিৎসা দেয়া হলে সাতদিনের মধ্যে সুষ্ঠু হয়ে যাওয়া সম্ভব বলে জানান তারা।
এমএইচএম/জেএইচ/জেআইএম