অনলাইনে পণ্য অর্ডারের নামে অপহরণের ফাঁদ!
অনলাইনে পণ্য অর্ডার দিয়ে কথিত বাসার ঠিকানায় ডেলিভারির সময় কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র। অনলাইনে বিজনেস করে এমন কোম্পানির কর্মকর্তারা চক্রটির প্রধান টার্গেট। অপহরণের পর অশ্লীল ছবি তুলে ব্লাকমেইল করে মুক্তিপণ আদায়ের প্রমাণও মিলেছে।
শনিবার রাজধানীর কদমতলী থানাধীন মুরাদপুর এলাকা থেকে একটি কোম্পানির জাকির হোসেন সোহাগ (৫২) নামে অপহৃত ম্যানেজারকে উদ্ধার ও তিন অপহরণকারীকে আটকের পর এ তথ্য জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আটকরা হলেন- নাছরিন আক্তার (২৮), তাইজুল ইসলাম (২৯) ও মো. ফয়সাল (২৮)।
র্যাব-৩ এর একটি দল অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (২০ জুলাই) মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে কদমতলীর মুরাদ নগরের রজ্জবআলী রোডের বাসা নং ১১১ থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধারসহ ওই তিনজনকে আটক করে।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) ও লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক লে. কর্ণেল এমরানুল হাসান জানান, ভুক্তভোগীর ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন, তার বড় ভাই জাকির হোসেন সোহাগ ওয়াটার পিউরিফায়ার থ্রি-এম ব্রান্ড কোম্পানির ম্যানেজার। ওয়াটার পিউরিফায়ার থ্রি-এম ব্রান্ড কোম্পানির মালামাল হোম ডেলিভারি সুবিধা থাকার কারণে অনলাইন থেকে নম্বর সংগ্রহ করে ফোন দেয় আটক নাছরিন আক্তার।
আরও পড়ুন>> অনলাইন শপিংয়ে প্রতারণা, মোবাইলের বদলে পেঁয়াজ
তিনি একটি ওয়াটার পিউরিফায়ার অর্ডার দিয়ে তাদের একটি ঠিকানায় ডেলিভারি দিতে বলেন। সে অনুযায়ী শনিবার দুপুরে নাছরিন আক্তারের কথিত বাসার ঠিকানায় ওয়াটার পিউরিফায়ার নিয়ে গেলে জাকির হোসেনকে আটকে রাখে।
মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং অপর দুই অপহরণকারী তাইজুল ও ফয়সাল মিলে জাকিরকে মারধর করে। অপহরণকারী দলের নারী সদস্য নাছরিনের সাথে অপহৃত জাকির হোসেনের জোরপূর্বক অশ্লীল ছবি তোলে এবং মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়ে সম্মানহানি ও হত্যার হুমকি দেয়।
এমরানুল হাসান জানান, ভুক্তভোগী বাধ্য হয়ে বাসায় ফোন করে অপহরণের কথা জানায়। সেই সঙ্গে অপহরণকারীদের মোবাইল ফোনের বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাতে বলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে ভাই দেলওয়ার বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা পাঠান।
আরও পড়ুন>> আইনজীবী পরিচয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন আদুরী
ওই ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পর র্যাব-৩ এর একটি দল শনিবার মধ্যরাতে জুরাইন শহিদুল ষ্টোর ৩৬৬/১ ও কদমতলীর রজ্জবআলী রোডের ১১১ নং বাসা থকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রের ওই তিনজনকে আটক করে।
র্যাব-৩ সিও বলেন, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা পরস্পর যোগসাজশে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন কৌশলে পণ্য ক্রয় ডেলিভারির নামে বাসায় আটকে মুক্তিপণ আদায় করে।
চক্রটির মূল টার্গেট অনলাইনে ব্যবসায়ীরা। টার্গেট করে অর্ডার দিয়ে বাসায় আনে। তারপর তাদের আটকে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ছবি তুলে ব্লাকমেইল করে মুক্তিপণ দাবি করে। আটকরা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কার্যক্রম করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জেইউ/এমএসএইচ