মেঘের কোলে রোদ হেসেছে...
‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি।
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি।’
না, আজ আমাদের কারও ছুটি নেই। সকাল হতেই সবাই ছুটেছি যার যার কর্মস্থলে।
তবে কবিগুরুর অমর সৃষ্টি ওই পঙ্তিমালার মতোই টানা ১০ দিন ভেজা দিনযাপনের পর মেঘের ফাঁক গলে আজ ধরা দিয়েছে সোনালী রোদ। তাতেই হেসেছে আকাশ, ছুটি নিয়েছে মনের ক্লেদ।
আরও পড়ুন>> জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প আছে, সুফল নেই
গেল ১০ দিন চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় ছিল টানা বৃষ্টি। ভারী বর্ষণে বারবার ডুবেছে বন্দরনগরী, যা ছিল গণমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
টানা বর্ষণে এখনও ডুবে আছে নগরের নিম্নাঞ্চল, জেলার রাউজান-পটিয়া-চন্দনাইশসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা। হালদা, ইছামতি, ডাবুয়া, সর্তা, ও শঙ্খ নদীতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপরে। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও নিম্নাঞ্চল। নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক বাড়িঘর।
এতকিছুর পরেও সোমবার (১৫ জুলাই) সকালের এক মুঠো সোনা রোদে সব দুঃখ-ক্লেদ ভুলে আবারও শুরুর প্রত্যয়ে ছুটছেন চট্টলাবাসী। মেঘের কোলে হেসে উঠা রোদ প্রেরণা হয়ে সঙ্গী হচ্ছে তাদের।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা খানম জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাস্তায় পানি, বাসার নিচে পানি। একেবারে এক ঘেয়ে সপ্তাহ শেষে আজ প্রথমবারের মতো রোদের দেখা মিলেছে। এ অনুভূতি যেন বেশ কয়েক বছর জেল খেটে কয়েদির মুক্তি। দেড় সপ্তাহ পর আজ ক্যাম্পাসে যাব। ভাবতেই মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন>> পানি যাবে কোথায়?
নিউ মার্কেট থেকে ফতেয়াবাদ রুটের হিউম্যান হলার চালক জসিম বলেন, ‘পুরো সপ্তাহেই পানির নিচে ছিল শহরটা। মাত্র তিনদিন গাড়ি চালাতে পেরেছি। এ কদিন ভাই বন্ধুদের থেকে কর্য করে চলতে হয়েছে। কাল বিকেল থেকে গাড়ি নিয়ে আবারও নেমেছি। আশা করছি, এমনটা আর হবে না, নইলে বৌ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।’
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমদ বলেন, ‘উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় মৌসুমি বায়ুর চাপের আধিক্য থাকায় টানা ১০ দিন বৃষ্টি ছিল। মৌসুমি বায়ুর সে প্রভাব কেটে গিয়ে আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আগামী দিনগুলোতে দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ৩ দশমিক ২৫ মিলিমিটার থেকে ৪ দশমিক ২৫ মিলিমিটার এবং গড় উজ্জ্বল সূর্যকিরণ দেবে ৫ দশমিক ৫ ঘণ্টা থেকে ৬ দশমিক ৫ ঘণ্টা। এখন থেকে দেশব্যাপী স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে। আগস্টে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে।’
আবু আজাদ/জেডএ/পিআর