ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘মূল সড়কে আয় ১০০০-১২০০, অলিগলিতে ২০০ টাকাও হয় না’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:১০ পিএম, ০৯ জুলাই ২০১৯

‘গলির ভেতর সারাদিন জ্যাম থাকে, ২০-৩০ টাকার বেশি খ্যাপ (যাত্রী) পাওয়া যায় না। দিনে দুই-তিনশ টাকার ভাড়া মারার চেয়ে রাস্তায় বইসা থাকাই ভালো। তাই আজ রিকশা চালামু না।’

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর রামপুরার ওয়াপদা রোডে জাগো নিউজের কাছে এ কথাগুলো বলছিলেন জাহাঙ্গীর নামে একজন রিকশাচালক। তিনি রামপুরার সড়কে শুয়ে ছিলেন।

জাহাঙ্গীর জানান, তার বাড়ি ময়মনসিংহে। ১৯৯৩ সাল থেকে তিনি ঢাকায় রিকশা চালান। প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা আয় তার। তবে মূল সড়কে রিকশা না চালাতে দিলে তার আয় দিনে ৫০০ টাকাও হবে কি-না সন্দেহ। তাই তিনি রিকশা না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘রিকশা চালিয়ে তার দৈনিক যে আয় হয় তার মধ্য থেকে ১২০ টাকা মালিকের কাছে জমা দিতে হয়। তিন বেলা খাওয়া খরচ বাদে চলে যায় আরও ১৫০-২০০ টাকা। এরপর থাকার খরচ বাদ দিয়ে ২০০ টাকাও থাকে না।’

জাহাঙ্গীরের মতো প্রায় এক হাজার রিকশাচালক খিলগাঁও-মালিবাগ থেকে রামপুরা, বাড্ডা, নতুনবাজার আর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন সড়কের মাঝখানে শুয়ে, বসে ও গল্পগুজব করে সময় কাটাচ্ছেন।

সরেজমিন রামপুরা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করার পাশাপাশি রামপুরার আশপাশের গলি থেকে বের হয়ে চাওয়া মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার এমনকি রিকশাকেও মূল সড়কে ঢুকতে দিচ্ছেন না। দু-একটি রিকশা সড়কে দেখলেই তারা চাকার হাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন। দড়ি বেঁধে, রাস্তায় পাথর ফেলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা।

রামপুরায় যানজটে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা অফিসগামী আয়নুর রহমান বলেন, ‘এখানে চলাফেরা খুবই কঠিন, খুব ভোগান্তি হচ্ছে। একঘণ্টা ধরে একই রাস্তায় বসে আছি। আমরা মনে করি, শ্রমিকদের দাবিগুলো মেনে নেয়া উচিৎ।’

Ricksha-(2)

এ বিষয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের সরিয়ে দেয়ার জন্য আলোচনা করছি। তারা এখনো রাস্তায় আছে।’

এদিকে সকাল ৯টার দিকে খিলগাঁও রেলগেটের সামনে অবস্থান নেন রিকশাচালকরা। এ সময় তারা সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকায় রিকশা না চালানোর হুমকি দেন।

খিলগাঁও থানা পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আছে। সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রিকশাচালকরা সড়ক থেকে সরেনি।

গত ৩ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটির (ডিটিসিএ) এক বৈঠকে রাজধানীর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রোববার (৭ জুলাই) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।

প্রাথমিকভাবে গাবতলী থেকে আসাদগেট হয়ে আজিমপুর ও সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রিকশা চলাচল করবে না। এ ছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা হয়ে খিলগাঁও-সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিকশাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অননুমোদিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোমবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর মুগদা এলাকায় প্রথমবারের মতো সড়ক অবরোধ করে রিকশাচালক ও মালিকরা আন্দোলন করে। দ্বিতীয় দিনে আরও ভয়াবহ রূপ নেয় তাদের এই অবরোধ।

এআর/এসআর/এমকেএইচ