রামপুরা-বাড্ডায় রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সড়ক থেকে রিকশা তুলে দেয়ার প্রতিবাদে রাজধানীর মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডাসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে সড়কে নেমেছেন রিকশাচালকরা। তারা রাজধানীর সব সড়কে রিকশা চলাচলের অনুমতি দেয়ার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টায় রাজধানীর রামপুরার ওয়াপদা রোড, উত্তর বাড্ডা ও কুড়িল বিশ্বরোডের সড়কের একপাশে অবরোধ করে। এর ফলে বাড্ডা-রামপুরা-মালিবাগসহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুল ও অফিসগামীদের পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
আব্দুর রাজ্জাক নামে এক রিকশাচালক বলেন, ‘আমাদের দাবি রাজপথ ছাড়তে হইব, রিকশা চলতে দিতে হইব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই একটাই দাবি।’
মো. জামাল নামে আরেক চালক বলেন, ‘রিকশাটা ছাইড়া দেন, আমাদের বাঁচতে দেন। আর যদি আমাগো মারতে হয় তা হইলে বিষ কিনা দেন, খায়া মইরা যাই বাবা। আমার কোনো কিছু নাই।’
তারা সড়কে রিকশা চলাচলের জন্য আলাদা লেন করার দাবি জানান।
রিকশাচালক মনির হোসেন বলেন, সড়কে রিকশা চলাচলের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে। সকাল ৮টা থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছে। চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। আজ পাঁচ ঘণ্টা এ কর্মসূচি পালন করব। এর মধ্যে দাবি না মানলে কালকে সাত ঘণ্টা সড়কে থাকব। এভাবে আন্দোলন চলবে। কারণ সব সড়কে আমাদের রিকশা চালাতে দিতে হবে।
রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধের কারণে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মালিবাগ পর্যন্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।
মনির হোসেন যখন কথাগুলো বলছিলেন তখন অন্য রিকশাচালকদের ‘সড়ক আছে যেখানে রিকশা চলবে সেখানে’, চলবে চলবে রিকশা চলবে’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় পথচারী ও অফিসগামীদের বাস থেকে নেমে হেঁটে যেতে দেখা যায়।
বাড্ডা থানার ডিউটি অফিসার এসআই মান্নান জাগো নিউজকে জানান, সকাল ৮টা থেকে উত্তর বাড্ডার ফুজি টাওয়ারের সামনে চালকরা অবস্থান নেন। সড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে ওসি রফিকুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে রিকশাচালকদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে সকাল ৯টার দিকে খিলগাঁও রেলগেটের সামনে অবস্থান নেন রিকশাচালকরা। এ সময় তারা সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকায় রিকশা না চালানোর হুমকি দেন।
খিলগাঁও থানা পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আছে। রিকশাচালকদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলছে।
এর আগে, গতকাল সোমবার সকাল ৭টা থেকে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন রিকশাচালক-মালিকরা। রাজধানীর মুগদা, মানিকনগর, মান্ডাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার সড়কে অবস্থান নেন তারা। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ জনগণ।
এরপর দুপুর দেড়টার দিকে মুগদা ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএম সিরাজুল ইসলাম, মান্ডা ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল আলম শামীম, ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়রুজ্জামান খায়রুল ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আশ্বাসে তারা সড়ক ছেড়ে চলে যান।
গত ৩ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটির (ডিটিসিএ) এক বৈঠকে রাজধানীর দুটি রুটে রিকশা চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতকাল রোববার (৭ জুলাই) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
প্রাথমিকভাবে গাবতলী থেকে আসাদগেট হয়ে আজিমপুর ও সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রিকশা চলাচল করবে না। এছাড়া কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে রামপুরা হয়ে খিলগাঁও-সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিকশাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অননুমোদিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এআর/এসআই/বিএ/এমকেএইচ