ঈদে দুর্ভোগ কমাতে দুই সপ্তাহ আগে স্কুল-কলেজ বন্ধের দাবি
আসন্ন ঈদ উল আজহায় যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে ঈদের দুই সপ্তাহ আগে স্কুল-কলেজ বন্ধের দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামের একটি সংগঠন। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জি এম কামরুল ইসলাম বলেন, ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ দুর্ঘটনা। এ সময়ে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য শহর-বন্দরে পরিবহন কাজে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে উৎস আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি লোক যাতায়াত করবে।
স্বভাবতই এতো মানুষের ঈদ প্রস্তুতি ও চলাচলের জন্য প্রতি বছরের মতো এ বছরর দেশের পরিবহন ব্যবস্থার ওপর অত্যাধিক চাপ পড়বে। যাত্রীদের এই অতিরিক্ত চাপ যথাযথভাবে ম্যানেজ করে সকলের যথা সময়ে আরামদায়ক ও নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য এখনই একটি সুচিন্তিত ও কার্যকরি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, ঈদে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমানোর জন্য সর্বপ্রথম যে পদক্ষেপটি নিতে হবে তা হলো ঈদের দুই সপ্তাহ আগেই সমস্ত স্কুল-কলেজ ছুটি দিয়ে দিতে হবে। যাতে পরিবারের সদস্যরা আগেই গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে পারে। এতে ঈদের আগে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে চাপ কমবে।
এ সময় সড়ক পরিবহন, রেল পরিবহন, নৌ পরিবহন এবং বিমান পরিবহনের বিষয় কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন অবসরপ্রাপ্ত এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। তিনি বলেন, দ্রুত গতিতে যানবাহন চলাচল, যান্ত্রিক ত্রুটি, ব্রেক ফেল, টায়ার বিস্ফোরণ, পুরাতন বাস/ট্রাক, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, ড্রাইভার ও পরিবহন শ্রমিকদের অদক্ষতা এবং অত্যাধিক পরিশ্রমসহ বৈরি আবহাওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। তাই এ বিষয়ে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
রেল পরিবহনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের ট্রেন ব্যবস্থাপনা দুর্বল ও নাজুক। বেশিরভাগ ট্রেন ইঞ্জিন ও কোচের যান্ত্রিক ত্রুটি, অত্যাধিক পুরাতন হলেও রেললাইনের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না করা, অনেক লাইনে ব্যালাস্ট হিসাবে পর্যাপ্ত পাথর ও স্লিপার না থাকা, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুগুলোর ঠিকমতো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ না করা, অতিরিক্ত যাত্রীবহন করা, ক্লিপসহ অন্যান্য ধাতু ও পাথর চুরি হওয়া, ড্রাইভারসহ সংশ্লিষ্টদের অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে রেল চলাচল ঝুঁকিতে রয়েছে।
ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগ কমাতে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বেশকিছু সুপরিশও তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- রাস্তা থেকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে ফেলা, ঈদের সময় রাস্তার পাশের হাট-বাজার বন্ধ রাখা, ওভারটেকিং প্রতিরোধ, হাইওয়ে ট্রাফিক আইন মেনে চলা, লক্কর-ঝক্কর গাড়ি চলাচল বন্ধ করা, কোরবানির পশু বহন করা ট্রাক রাস্তায় নষ্ট হয়ে গেলে দ্রুত সরিয়ে নেয়ার জন্য ১০ কিলোমিটার পরপর রেকারের ব্যবস্থা রাখা, দূরপাল্লার পরিবহনে পথে কোনো যাত্রী উঠানো যাবে না, যানবাহনে নতুন টায়ার ব্যবহার করা, বাস্তবতার আলোকে ট্রেনের সময়সূচি নির্ধারণ, নৌ-পথে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী বহন বন্ধ করা, হজের সময় যেমন বিমান ভাড়া করা তেমনি ঈদের সময় ট্রেন, বাস, নৌ-যান, ছোট বিমান/হেলিকপ্টার ভাড়া করা।
এমএএস/এসএইচএস/জেআইএম