ওসির কক্ষে বিশ্রামে ডিআইজি মিজান
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানের কক্ষে বিশ্রামে আছেন ডিআইজি মিজান। দুদকের মানি লন্ডারিং মামলায় আজ আদালতে জামিন নিতে গেলে গ্রেফতার হন তিনি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে আদালত থেকে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের জিম্মায় নিয়ে আসা হয়।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তড়িঘড়ি করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে নেয়া হয় ডিআইজি মিজানকে। তখন থেকে থানার বড় বাবুর কক্ষ দখল করে আছেন তিনি! রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি ওসির কক্ষে অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শাহবাগ থানাজুড়ে সুনসান নীরবতা। ওসির কক্ষ অন্যান্য দিন দাপ্তরিক প্রয়োজনে অন্য অফিসারদের অবাধ প্রবেশাধিকার থাকলেও আজ ছিল অবরুদ্ধ। প্রবেশদ্বারের ভেতরের দরজায় একজন পুলিশ কনস্টেবল সটান দাঁড়িয়ে। দু-তিনবার দরজায় টোকা দেয়ার পর দরজা খানিকটা খোলা হয়। সোয়া ২ ঘণ্টা অবস্থানকালে হাতেগোনা কয়েকজনকে (সম্ভবত শাহবাগ থানা পুলিশ ও ডিআইজি মিজানের কেউ পরিচিত, নিশ্চিত হওয়া যায়নি) ওই কক্ষে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তারা কখনও ডিআইজির চশমা, খাবার ও মামলা-সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে ওই কক্ষে প্রবেশ করেন।
আজ রাতে আসামি হিসেবে রাত কাটাবেন তিনি। বড় কর্মকর্তা হিসেবে তাকে হয়তো ওসির কক্ষেই রাখা হতে পারে বলে জানা গেছে। আগামীকাল সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
আজ দুদকের মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠাতে শাহবাগ থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
জামিন আবেদনের শুনানি শেষে আদালত বলেন, ‘তিনি (ডিআইজি মিজান) পুলিশের ভাবমূর্তি ধ্বংস করে দিয়েছেন। আমরা তাকে পুলিশের হাতে দিচ্ছি।’
এরপর দুই বিচারপতি এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন। পরে আদালতের আদেশটি কোর্ট প্রশাসন শাহবাগ থানাকে জানালে পুলিশের রমনা বিভাগের একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ও শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান হাইকোর্টে আসেন।
এর আগে নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
গত ১৯ জুন আদালত এক আদেশে মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত ২৪ জুন তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
এমইউ/জেএইচ/জেআইএম